দেশজুড়ে

ফরিদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে কিশোর খুন

ফরিদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে কিশোর খুন

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে ইয়াসিন খালাসী (১৬) নামে এক ওয়ার্কশপ শ্রমিক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় রায়হান ও সজীব নামে দুই যুবককে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়।

Advertisement

শনিবার (১০ মে) দিনগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াসিন খালাসী ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর খালাসীর ছেলে।

এদিকে ইয়াসিনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষ বাদশা শরীফের বাড়িসহ অন্তত ১০-১২টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটের ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার থানমাত্তা গ্রামে বহু পুরাতন একটি বটগাছ রয়েছে। সেই বটগাছের নিচে স্থানীয় নুরা নামে একজন আসর বসিয়ে রাতভর গানবাজনা করতেন। গত দুই বছর হলো তিনি মারা যান। এরপর থেকে তার স্ত্রী হালিমা সেখানে বসবাস করেন। গত কয়েক মাস আগে বটগাছের একটি ডাল দোকানের ওপর পড়লে ডালটি কেটে ফেলেন শরীফ গ্রুপের দোকান মালিক। সেই ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে হালিমার পক্ষ নেন জাহাঙ্গীর খালাসী। অন্য গ্রুপের পক্ষ নেন বাদশা শরীফ ও আলমগীর শরীফ।

Advertisement

এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে শনিবার রাত ১০টার দিকে থানমাত্তা বটতলা এলাকা থেকে ইয়াসিন খালাসীকে পার্শ্ববর্তী কালামৃধা ইউনিয়নের ফুলমাল্লিক গ্রামের আউয়াল বেপারীর ছেলে ইসমাইল বেপারীকে দিয়ে ইয়াসিনকে ডেকে নেয়। পরে পার্শ্ববর্তী নির্জন এলাকায় ব্রিজের নিচে ধানক্ষেতে নিয়ে ইয়াসিনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।

নিহত ইয়াসিনের বাবা জাহাঙ্গীর খালাসি জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ডেকে নিয়ে নির্জন স্থানে ধানক্ষেতে আমার ছেলেকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু খুনিদের ভেতরে দুইজন আহত হলে তাদের লোকজনের খবরে আমার ছেলেকে দেখতে পাই। তা না হলে ছেলের মরদেহও পাওয়া যেত না। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলমগীর সরদার জাগো নিউজকে বলেন, খুনে অভিযুক্তদের পক্ষে দুজন ঠেকাতে গিয়ে তারাও আহত হয়েছেন। তারা হচ্ছেন ওই গ্রামের ফকু শেখের ছেলে রায়হান শেখ (১৮) ও তার আত্মীয় সজীব মাতব্বর। তার বাড়ি কাশেমপুর এলাকায়।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে কালামৃধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল মাতুব্বরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Advertisement

আজিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাজাহান হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, যতটুকু জানতে পেরেছি নিহত ইয়াসিনের সঙ্গে কালামৃধা গ্রামের কয়েকজন কিশোরের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, মৌখিকভাবে ঘটনা জানতে পেরেছি। পূর্ব শত্রুতার জেরে ডেকে নিয়ে খুন করা করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল থেকে নিহতের মরদেহ এসে পৌঁছেনি। অফিসিয়াল কোনো কাগজপত্রও পাইনি। নিহতের মরদেহ আসার পর বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব হবে।

এন কে বি নয়ন/এমএন/জেআইএম