দেশজুড়ে

বিক্রি হলেই গোয়ালঘরের দরজা কেটে বের করা হবে ৪০ মণের সম্রাটকে

বিক্রি হলেই গোয়ালঘরের দরজা কেটে বের করা হবে ৪০ মণের সম্রাটকে

গত বছর ওজন ছিল ৩২ মণ। তবে প্রত্যাশামাফিক দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেননি। এবছর ‌‘সম্রাট’ নামের ষাঁড়টির ওজন বেড়ে হয়েছে ৪০ মণ। দিনাজপুরের দানবাকৃতির ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। জেলার মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি করছেন খামারি।

Advertisement

দানবাকৃতির সম্রাট ৪ বছর ৮ মাস ধরে গোয়ালঘরেই রয়েছে। বিশাল সাইজের কারণে তাকে বের করা যায়নি। তাকে বাইরে বের করতে হলে কাটা লাগবে গোয়ালঘরের দরজা। তবে ষাঁড়টির মালিক জানিয়েছেন, বিক্রি হলে গোয়ালঘরের দরজা কেটে বের করা হবে সম্রাটকে।

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা ইউনিয়নের জোত সাতনালা গ্রামের ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা আনিসুল হক ষাঁড়টি লালন-পালন করছেন। সাদা-কালো রঙের সুঠাম দেহের অধিকারী সম্রাটের দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ও উচ্চতা সাড়ে ৭ ফুট। ওজন ৪০ মণ। ষাঁড়টির মালিকের আশা, সম্রাটকে ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন।

সম্রাটের খাবারের তালিকায় রয়েছে সবুজ ঘাস, ভেজানো ছোলা, গমের ভুসি, খৈল, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা ধরনের পুষ্টিকর খাদ্য। প্রতিদিন ৩-৪ বার গোসল করানো হয়। ব্যবহার করা হয় সাবান ও শ্যাম্পু। মশা যাতে কামড় না দেয় সেজন্য স্প্রে করা হয় মশানাশক ওষুধ। সম্রাটের মালিক আনিসুল হক বলেন, সম্রাটের দাম ১৫ লাখ টাকা ধরা হলেও এর কমেও বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ খাবারের জন্য প্রতিদিন প্রায় হাজারখানেক টাকা খরচ হয়। গতবছর কোরবানিতে বিক্রি না করায় এক বছরে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যে কেউ যোগাযোগ করে এসে গরুটি দেখে পছন্দ হলে কিনে নিতে পারবেন। আনিসুল হক আরও বলেন, ‘এবার সম্রাটের চেয়ে বড় গরু দিনাজপুরে আর দ্বিতীয়টি নেই। ফিতা পদ্ধতিতে গরুটির লাইভ ওজন প্রায় ৪০ মণ। এর দাম রাখছি ১৫ লাখ টাকা। তবে দর কষাকষির সুযোগ রয়েছে।’

Advertisement

সম্রাটের পরিচর্যাকারী মালিকের ছেলে আসফাকুল হক নোবেল জানান, সম্রাটের থাকার জায়গায় ২৪ ঘণ্টা তিনটি ফ্যান চলে। বিদ্যুৎ না থাকলে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতে হয়। প্রতিদিন তিন থেকে চারবার গোসল করাতে হয়। প্রয়োজনমতো খাবার ও সঠিক পরিচর্যায় দিন দিন গরুটির আকৃতি এবং ওজন বেড়ে গত এক বছরে বেড়ে ৪০ মণে এসে দাঁড়িয়েছে।

আরেক ছেলে মো. রমেল হক বলেন, ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টিকে হাটে নিয়ে যাওয়া খুব কঠিন। কারণ তাকে ৪ বছর ৮ মাস ১৭ দিনে বাইরে বের করা হয়নি। তাই তাকে হাটে নিয়ে গেলে সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ও উচ্চতা সাড়ে ৭ ফুট হওয়ায় দরজা দিয়ে বের করা যাবে না। তাই গরুটি বিক্রি হলে দরজা কেটে বের করে ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়া হবে।

ষাঁড়টি দেখতে আসা রাজিব উদ্দিন বলেন, ফেসবুকে ছবি দেখে দেখতে এসেছিলাম। ছবি দেখে আসলে বুঝতে পারিনি ষাঁড়টি কত বড়! বাস্তবে ছবির চেয়ে এটি দেখতে অনেক সুন্দর ও অনেক বড়।

এ বিষয়ে চিরিরবন্দর উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান জাগো নিউজকে বলেন, সম্ভবত সম্রাটই দিনাজপুরের সবচেয়ে বড় গরু। ফ্রিজিয়ার জাতের গরুটি লালন-পালনে আমরা খামারিকে সবসময় পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবার গরুটি বিক্রি করতে না পারলে খামারির অনেক লোকসান হয়ে যাবে। কারণ এত বড় গরু লালন-পালন করা যেমন খুব কষ্টকর তেমনি ব্যয়বহুল।

Advertisement

এমদাদুল হক মিলন/এসআর/জিকেএস