মালয়েশিয়া থেকে অবৈধ অভিবাসীদের আটক করতে ‘টার্গেটেড স্ট্রাইক অপারেশন’ অভিযান পরিচালনা করছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। রাজধানী থেকে শুরু করে রাজ্যে রাজ্যে চলছে এ অভিযান।
Advertisement
বুধবার (৭ মে) মালয়েশিয়াজুড়ে চলে টার্গেটেড স্ট্রাইক। এ অভিযানে ১০৭ বাংলাদেশিসহ ১৬২ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশন পরিচালক ওয়ান মোহাম্মদ সৌপি ওয়ান ইউসুফ বলেন, ৭ মে, কুয়ালালামপুর জালান কুচিং এর একটি কনডোমিনিয়ামের নির্মাণ স্থানে স্থানীয় সময় সকাল ১০.৩০ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলা এই অভিযানে ২০০ বিদেশি কর্মীকে তল্লাশি ও তাদের কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্য থেকে ৬০ জনকে ১৯৫৯/৬৩ সালের অভিবাসন আইনের অধীনে বিভিন্ন অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে ৪১ জন বাংলাদেশি ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ান, মিয়ানমার এবং ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন।
ওয়ান মোহাম্মদ সৌপি বলেন, সপ্তাহব্যাপী গোয়েন্দা তদন্তের পর এই অভিযানে কনডোমিনিয়াম প্রকল্পের মালিক অবৈধ শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছিলেন। ২৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী গ্রেফতার অভিবাসীদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বুকিত জলিল ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে।
Advertisement
এদিকে বুধবার সেলাঙ্গ রাজ্যের সাইবারজায়ায় একটি নির্মাণ স্থানে অভিযান চালিয়ে ১০ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। জেআইএম-এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (অপারেশনস), জাফরি এমবক তাহা বলেন, বৈধ কাগজপত্র না থাকা এবং দেশে অতিরিক্ত সময় অবস্থান করায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার অভিবাসীরা মিয়ানমার, বাংলাদেশ এবং ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক। এছাড়াও, গ্রেফতারদের মধ্যে কয়েকজন ইউএনসিএইচআর কার্ডধারী রয়েছেন।
গ্রেফতারদের ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়ার জন্য পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখান থেকে কেএলআইএ ডিটেনশন ডিপোতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি ডিরেক্টর।
একই দিনে পেরাক রাজ্যের ইপোহ এলাকার বার্চামের একটি নির্মাণস্থলে অভিযান চালিয়ে ৯২ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করে ইমিগ্রেশন।
Advertisement
পরিচালক জেমস লি বলেন, জনসাধারণের অভিযোগ পাওয়ার পর এবং গোয়েন্দা ও অপারেশন ইউনিটের তদারকি ও গোয়েন্দা তথ্যের ফলে সকাল ১০.৩০ থেকে দুপুর ১২.৩০ পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়।
এই অভিযানে, ১৪১ জন ব্যক্তির কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৯২ জন বিদেশি ছিলেন যারা ১৯৫৯/৬৩ সালের ইমিগ্রেশন আইন এবং ১৯৬৩ সালের ইমিগ্রেশন রেগুলেশনের অধীনের অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ৯২ জন বিদেশির মধ্যে ৬৬ জন বাংলাদেশি, বাকিরা নেপালি (৯), মিয়ানমার (৪), ইন্দোনেশিয়ান (১২) এবং (১) পাকিস্তানি নাগরিক। গ্রেফতারদের সবার বয়স ২০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। গ্রেফতারদের ইপোহ ইমিগ্রেশন ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৬ মে মঙ্গলবার পর্যন্ত অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতারের বিষয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগ এক বিবৃতিতে বলছে, ৩০ হাজার ৯৯৩ জন বিদেশির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, ১ জানুয়ারি থেকে ৬ মে, ২০২৫ পর্যন্ত সময়কালে অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ ও সুরক্ষার জন্য মোট ৬৩৪ জন নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইমিগ্রেশন, অবৈধ অভিবাসী এবং বৈধ পাস ছাড়াই বিদেশিদের নিয়োগকারী নিয়োগকর্তাদের খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে দৃঢ় এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এমনকি অভিবাসন বিভাগও জাতীয় নিয়ম লঙ্ঘনকারী নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করে না, যার মধ্যে তাদের নিয়োগ কোটা স্থগিত করা বা দেওয়ানি ব্যবস্থা নেওয়া অন্তর্ভুক্ত।
এমআরএম/এএসএম