দেশজুড়ে

টাকা ছাড়া মেলে না ড্রাইভিং লাইসেন্স

টাকা ছাড়া মেলে না ড্রাইভিং লাইসেন্স

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ঠাকুরগাঁও সার্কেল অফিসের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- টাকা দিলেই পরীক্ষা ছাড়াই ড্রাইভিং লাইসেন্স মেলে, ঘুস বাণিজ্যসহ আরও বেশ কয়েকটি অভিযোগ।

Advertisement

বুধবার (৭ মে) দুপুরে দুদকের সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজীর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানের সময় বিআরটিএ অফিসের সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এসময় ঠাকুরগাঁও বিআরটির সহকারী পরিচালক তন্ময় কুমারকে ঘুস বাণিজ্য ও দলালের বিষয়ে দুদক কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করতে দেখা যায়।

অভিযান শেষে ঠাকুরগাঁও জেলার দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল ‘জিকজ্যাক’ নামে মাঠ পর্যায়ে একটি ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়ে থাকে। সেই পরীক্ষায় প্রত্যেকের থেকে ৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়। যারা টাকা আগে দেন তাদের মাঠে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, আমরা এ বিষয়ে বিআরটিএর সহকারী পরিচালক তন্ময় কুমারের কাছে জানতে চেয়েছি এটা কেন হচ্ছে? জবাবে তিনি একটি শোকজ লেটার মোটরযান পরিদর্শককে ইস্যু করবেন বলে জানান। আরেকটি অভিযোগ ছিল- এ অফিসে দালালের একটি দৌরাত্ম্য রয়েছে। সকাল থেকে আমাদের একটি টিম ছদ্মবেশে অফিসে অবস্থান করছিল। দুজন দালালের মোবাইল নম্বর আমাদের টিম সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে। নম্বরগুলো এই অফিসের কারো কি না তা খতিয়ে দেখছি।

এই দুদক কর্মকর্তা আরও বলেন, এছাড়া আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল, ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (টিটিসি) ৭০ জন একটি প্রশিক্ষণে অংশ নেন। তাদের প্রত্যেকের থেকে ২৫০০ টাকা করে মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা লাইসেন্স দেওয়া হবে মর্মে টিটিসি আদায় করে। তাই মোটরযান পরিদর্শকে একটি শোকজ লেটার ইস্যু করা হবে। কেন তিনি পরীক্ষা ছাড়া লাইসেন্স দিলেন এবং ফিল্ডে কেন প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়। এদিকে আইয়ুব আলী নামে এক দালাল অগোচরে চলে যাওয়ায় তাকে আইনের হাতে তুলে দিতে বিআরটিএকে বলা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও বিআরটিএ কার্যালয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে যাওয়া মুনছুর আলী অভিযোগ করে বলেন, এ অফিসে ঘুস ছাড়া গাড়ির নতুন বা লাইসেন্স নবায়ন হয় না। তাও নিজে করতে গেলে পোহাতে হয় নানা বিড়ম্বনা। দ্বারস্থ হতে হয় দালালদের। যে কোনো কাজের ঘুসে টাকা দালালরা নির্দিষ্ট হারে জমা দেন মোটরযান পরিদর্শকের কাছে। পরে ওই টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়।

আরেক ভুক্তভোগী আলম অভিযোগ করে বলেন, বিআরটিএ অফিসকে ঘুসের কারখানা করে ফেলা হয়েছে। টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না।

Advertisement

অভিযোগের বিষয়ে ঠাকুরগাঁও বিআরটিএ অফিসের সহকারী পরিচালক তন্ময় কুমারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তানভীর হাসান তানু/জেডএইচ/এএসএম