‘বাংলাদেশের অনেক এলাকার ভূগর্ভস্থ পানি আর্সেনিক দ্বারা দূষিত। অবিরাম জলাবদ্ধতায় ধান চাষ করলে চালের মধ্যে এই বিষাক্ত উপাদানের মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যায়। তবে থ্রিএফফোরডি (৩ দিন জলাবদ্ধতা ও ৪ দিন নিষ্কাশন) পদ্ধতি প্রয়োগে চালের মধ্যে অজৈব আর্সেনিকের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। গবেষণায় দেখা গেছে, অবিরাম জলাবদ্ধতার তুলনায় থ্রিএফফোরডি পদ্ধতিতে চালের আর্সেনিকের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে।’
Advertisement
এমনটিই জানিয়েছেন থ্রিএফফোরডি ভিত্তিক নিরাপদ ও পুষ্টিকর ধান উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, এই প্রযুক্তি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
মঙ্গলবার (৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত ‘নিরাপদ ও পুষ্টিকর ধান উৎপাদনের জন্য প্রজনন এবং পানি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের মাঠ দিবসের আয়োজনে এসব কথা বলেন অধ্যাপক রফিকুল।
Advertisement
ওই অনুষ্ঠানে গবেষকরা ধানের নিরাপদ উৎপাদনে নতুন সেচ কৌশল থ্রিএফফোরডি পদ্ধতির কার্যকারিতা তুলে ধরেন।
প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, এই গবেষণার ফলাফল প্রমাণ করে যে সীমিত সম্পদেও কৃষকরা থ্রিএফফোরডি পদ্ধতি ব্যবহার করে ফলন ব্যাহত না করেই নিরাপদ চাল উৎপাদন করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে ধানের ফলনে কোনো ঘাটতি হয়নি। পাশাপাশি সেচের জন্য ব্যবহৃত পানি ৬৫ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে, যা পানিসংকট মোকাবিলায় বড় ধরনের অগ্রগতি।
প্রকল্পটি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতায়, জাইকার কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঁঞা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. সালমা লাইজু।
Advertisement
আসিফ ইকবাল/এমএন/জেআইএম