রাজধানীর খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডায় পৃথক ঘটনায় তিনি শিক্ষার্থী এবং এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- খিলগাঁওয়ের সামিয়া আক্তার (১৪), শিহাবুল ইসলাম (২৪), যাত্রাবাড়ীর প্রিয়ন্তী সরকার (১৪) ও বাড্ডা থেকে মোছা. বিথি (২০)। তাদের মরদেহ ময়নতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
Advertisement
এদের মধ্যে শিহাবুল ইসলামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানায়। তিনি বর্তমানে খিলগাঁওয়ে রসুলবাগ এলাকায় থাকতেন।
সোমবার (৫ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেকের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বোন উম্মে সাইমা জানান আমার ভাই, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিল। স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য পরীক্ষাও দিয়েছিল। স্কলারশিপ না পাওয়ায় অতি কষ্টে তার নিজের ওপর অভিমান করে রুমে গিয়ে সিলিং ফ্যানের হুকের সঙ্গে নিজের বেল্ট দিয়ে গলায় ফাঁসি দেয়। পরে আমরা দেখতে পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে আমার ভাইকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করি।
Advertisement
অন্যদিকে, যাত্রাবাড়ির কাজলা ভাঙ্গা প্রেস এলাকায় প্রিয়ন্তী সরকার (১৪) নামে এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে যাত্রাবাড়ীর কাজলা ভাঙ্গা প্রেস মাদবার গলি এলাকার পরিতোষ সরকারের মেয়ে।
সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সোয়া ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই প্রিতম সরকার জানান, আমার বোন এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। বাবা-মা পড়াশোনার জন্য বকাঝকা করলে সবার ওপর অভিমান করে নিজরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে সিলিংফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নেয়। পরে আমরা দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি।
এদিকে বাড্ডার আব্দুল্লাহবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে বিথী আক্তার (২০) নামে এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি নাটোর জেলার লালপুর থানাধীন উত্তর লালপুর এলাকায়। বর্তমানে বাড্ডার আব্দুল্লাহবাগ এলাকার একটি বাসায় তার স্বামীর সঙ্গে ভাড়া থাকতেন।
Advertisement
সোমবার (৫ মে) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেকের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত দেড়টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী আসাদ মিয়া জানান, আমাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে অভিমান করে তার নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দেয় সে। আমরা দেখতে পেয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে অচেতন অবস্থায় দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি।
খিলগাঁও থানার উত্তর গোড়ান এলাকার একটি বাসা থেকে মোছা. সামিয়া আক্তার (১৪) নামের এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরের দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস মাহমুদ জানান, আমরা নিহতের স্বজনের থেকে জানতে পারি নিহত কিশোরী খিলগাঁও মেরাদিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। পারিবারিক বিষয় নিয়ে নিজ রুমে গিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নেয় সে। পরে তাকে উদ্ধার করে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওখানেই তার মৃত্যু হয়।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়গুলো নিশ্চিত করে জানান মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
কাজী আল-আমিন/এএমএ/এএসএম