আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ‘জুলাই ঐক্য’ নামের এক নতুন জোট আত্মপ্রকাশ করেছে। জোটের অন্যতম সংগঠক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদের দাবি, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন দেশের স্বাভাবিক গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন অঙ্কুরে বিনষ্ট করার শামিল।
Advertisement
গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ‘জুলাই স্পিরিট’ ধারণকারী সংগঠনগুলোর ঐক্য গঠন ও পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জুলাই ঐক্য প্ল্যাটফর্মের অন্যতম সংগঠক ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ। বক্তব্যে তিনি বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে জীবন দিতে হয় দুই হাজারের বেশি মানুষকে। একই সঙ্গে আহত ও পঙ্গু হন প্রায় ৩১ হাজার মানুষ। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও দলীয় ক্যাডারদের দ্বারা পরিচালিত এ হামলা আন্তর্জাতিক মহলে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
মুসাদ্দিক বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বেসরকারি মহলের কিছু অংশ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। যা একদিকে শহীদ, আহত ও পঙ্গু জনগণের আত্মত্যাগের চূড়ান্ত অপমান। একই সঙ্গে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পুনর্বাসন দেশের স্বাভাবিক গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন অঙ্কুরে বিনষ্ট করার শামিল।
Advertisement
এসময় ‘জুলাই ঐক্য’ জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে মুসাদ্দিক বলেন, জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী বিপ্লবীদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শংকিত। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা বিভিন্ন দাবি তুলে জুলাইয়ে অংশ নেওয়া বিপ্লবীদের বিতর্কিত করতে চায়। আমরা বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করেই আমরা বিভিন্ন মতাদর্শের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসমূহ নিয়ে আজ ‘জুলাই ঐক্য’ নামে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় জোটের ঘোষণা করছি।
জোটের মূল দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, জোটের মূল ও একমাত্র দাবি হচ্ছে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও চব্বিশের গণহত্যা, শাপলা চত্বর ট্র্যাজেডি, পিলখানা ট্র্যাজেডি, গুম, খুন, দুর্নীতিসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরে যেসব অপকর্ম সংঘঠিত হয়েছে তার সঙ্গে জড়িত সবার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় ক্যাম্পেইন জারি রাখা।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের আগামী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ৭ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে দলটি।
‘জুলাই ঐক্য’ জোটে রয়েছে যেসব সংগঠন১. আপ বাংলাদেশ ২. ইনকিলাব মঞ্চ৩. জুলাই রেভ্যুলেশনারি জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্স৪. জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স (জেআরএ) ৫. বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ৬. অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন৭. প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পুনাব)৮. স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি (এসএডি)৯. প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পুসাব)১০. রক্তিম জুলাই১১. সোচ্চার ঢাবি১২. নিরাপদ বাংলাদেশ চাই
Advertisement
১৩. একতার বাংলাদেশ১৪. ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম চাই১৫. এইচআরএসএস১৬. জুলাই বিগ্রেড১৭. স্টুডেন্ট রাইটস ওয়াচ১৮. আজাদ ফিলিস্তিন১৯. জুলাই বিপ্লব পরিষদ২০. স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন২১. আমাদের মোহাম্মদপুর২২. জাস্টিস ফর অল২৩. রেড অ্যালায়েন্স২৪. ছাত্র নাগরিক ঐক্য২৫. ইউথ ফর পিস
২৬. ঢাকা মুভমেন্ট২৭. ধানমন্ডি অ্যালায়েন্স২৮. কমিউনিটি অ্যালায়েন্স২৯. জুলাইয়ের প্রেরণা৩০. মুক্তির আন্দোলন৩১. ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন৩২. জনতার ঐক্য৩৩. আগামীর বাংলাদেশ৩৪. জুলাই মঞ্চ এবং৩৫. পিপলস অ্যাকটিভিস্ট কোয়ালিশন (প্যাক)
এফএআর/কেএসআর/এএসএম