যুক্তরাজ্যে কাজ কিংবা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে ভিসার আবেদনকারী নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের ওপর নজরদারি ও কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর। হোয়াইটহল কর্মকর্তাদের মতে, এসব দেশের আবেদনকারীরা সবচেয়ে বেশি আশ্রয় প্রার্থনা করেন—এমন সন্দেহ থেকেই এই উদ্যোগ।
Advertisement
ব্রিটিশ সরকার বর্তমানে ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) সঙ্গে যৌথভাবে একটি গোয়েন্দা মডেল তৈরির কাজ করছে, যাতে এসব দেশের আবেদনকারীদের মধ্যে কারা আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন তা পূর্বাভাস দেওয়া যায়।
আরও পড়ুন>>
সব ধরনের ভিসা ফি বাড়াচ্ছে যুক্তরাজ্য, কার্যকর ৯ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, গ্রেফতারের শঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রে অনিশ্চয়তার মুখে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎএক অভিবাসন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, এ ধরনের উদ্যোগ সফল হবে কি না তা নির্ভর করছে এই মডেল এবং তার গোয়েন্দা তথ্য কতটা কার্যকরভাবে কাজ করে, তার ওপর। তিনি আরও বলেন, এমন পূর্বাভাসমূলক মডেল যথাযথ না হলে তা বিভ্রান্তিকর বা বৈষম্যমূলক ফল দিতে পারে।
Advertisement
স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মার্চ মাসে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাজ্যে কাজ বা পড়াশোনার ভিসায় বৈধভাবে প্রবেশ করে পরবর্তীতে আশ্রয়ের আবেদন করা প্রায় ১০ হাজার ব্যক্তি করদাতাদের অর্থে পরিচালিত আবাসন, যেমন- হোটেলে, অবস্থান করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিলেন পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও শ্রীলঙ্কার নাগরিক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান শনিবার জানায়, সরকার এমন ভিসাধারীদের সংখ্যা কমানোর পরিকল্পনা করছে যারা পরবর্তীতে আশ্রয়ের আবেদন করেন। এই উদ্দেশ্যে ভিসার অংশ হিসেবে জমা দেওয়া ব্যাংক বিবরণীও পর্যালোচনায় আনা হবে।
দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র দপ্তরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, যেসব ভিসাধারী ‘আশ্রয় পাওয়ার সম্ভাব্যতা’ রয়েছে, তাদের ভিসা আগে থেকেই প্রত্যাখ্যান করা হবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেশন অবজারভেটরির পরিচালক ম্যাডেলেইন সাম্পশন বলেন, সরকার এবং এনসিএ আদৌ সঠিকভাবে এই ধরনের প্রোফাইল নির্ধারণ করতে পারবে কি না, তা বাইরে থেকে বলা কঠিন। তার মতে, যদি সুস্পষ্ট কোনো ধারা না থাকে, তাহলে এই মডেল বিভ্রান্তিকর বা অসংগত সিদ্ধান্তের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, সরকার ভিসা মঞ্জুর করার সময় অনেক ক্ষেত্রেই বৈষম্যমূলক মানদণ্ড অনুসরণ করতে পারে—এটি তাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। তবে এতে আইনগত চ্যালেঞ্জ আসার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ানকেএএ/