রাজনীতি

বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা, যানজট নিরসনে কাজ করছে পুলিশ-সেনা

বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা, যানজট নিরসনে কাজ করছে পুলিশ-সেনা

দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টায় কাতারের আমিরের পাঠানো একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন।

Advertisement

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দর থেকে তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত রয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের জন্যও জারি করা হয়েছে কড়া নির্দেশনা।

সকাল থেকে সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত উপস্থিতি রয়েছে। সাদা-পোশাকে বিপুল-সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। সড়কে থাকা গাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। র্যাবের পাশাপাশি রয়েছে সেনাবাহিনীর গাড়িরও। সেনা সদস্যরা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের সড়কে অবস্থান করা গাড়ি সরিয়ে দিচ্ছেন। এতে কমছে যানজট।

এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। ডিএমপির পক্ষে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু নির্দেশনা।

Advertisement

এদিন সকাল বিমানবন্দর সড়কের গণপরিবহনকে কোনোরকম জটলা করতে দিচ্ছে না সেনা সদস্যরা। প্রতিটি গাড়িকে অযথা সড়কে না থাকতে সতর্ক করছেন সেনা সদস্যরা। রয়েছে পুলিশের চেকপোস্টও। গাড়ি তল্লাশির পাশাপাশি অবৈধভাবে গাড়ি রাখলেই করা হচ্ছে মামলা-জরিমানা। রয়েছে র্যাবের গাড়িও। পাশাপাশি সড়কে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে সড়কে ছিটানো হয়েছে পানি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমানের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে ডিএমপি। ডিএমপি জানিয়েছে, পুলিশের পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং বিশেষ শাখার (এসবি) সদস্যদেরও মোতায়েন করা হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষসভা। সভায় র্যাব ও এসবি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভায় বিষয়টি উঠে আসে। সভা থেকে খালেদা-জুবাইদার জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার যাত্রাপথে থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। এছাড়া নেতাকর্মীদের জন্যও জারি করা হয়েছে কড়া নির্দেশনা। কেউ যেন বিমানবন্দর বা চেয়ারপারসনের বাসভবনে প্রবেশ না করে। নেতাকর্মীদের জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানাতে বলা হয়েছে। খালেদা জিয়ার গাড়ির সঙ্গে মোটরসাইকেল ও হেঁটে চলার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিরাপত্তার চাদরে মোড়া থাকবে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ফিরোজাযানজটের শঙ্কা, ফ্লাইট মিস এড়াতে সময় নিয়ে বের হওয়ার পরামর্শঢাকাজুড়ে যানজটের শঙ্কা, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের করণীয় কী?

কর্মীদের প্রতি দেওয়া নির্দেশনায় বিএনপি জানিয়েছে, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে অভ্যর্থনার জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় অবস্থান করতে বলা হয়েছে। উত্তর বিএনপি থাকবে বিমানবন্দর থেকে লা মেরিডিয়ান পর্যন্ত, ছাত্রদল লা মেরিডিয়ান থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত, দক্ষিণ বিএনপি রেডিসন হোটেল থেকে আর্মি স্টেডিয়াম, স্বেচ্ছাসেবক দল আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত। কৃষকদল, শ্রমিকদল, ওলামা দল, তাঁতী দল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, পেশাজীবী ফোরাম, মহিলা দল ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারাও নির্ধারিত রুটে অবস্থান নেবেন।

Advertisement

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মুভমেন্ট চলাকালীন গাড়িবহরে অননুমোদিত গাড়িযুক্ত না করার জন্য বিশেষ অনুরোধ করা হলো। এয়ারপোর্টে আগত অভ্যর্থনাকারীদের যানবাহন ৩০০ ফিট রাস্তা সংলগ্ন স্বদেশ প্রোপার্টিজের খালি জায়গায় পার্কিং করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

গুলশানে আগত সব সাংবাদিকদের যানবাহন গুলশান সোসাইটি পার্কের আশপাশের সড়কে এক লেনে পার্কিং করার জন্য অনুরোধ করা হলো। গুলশানে আগত অভ্যর্থনাকারীদের যানবাহন বিচারপতি শাহাবুদ্দিন পার্কের আশপাশের সড়কে এক লেনে রাখার অনুরোধ করা হলো। উল্লিখিত নির্ধারিত জায়গা ছাড়া মহাসড়ক বা অন্য কোনো জায়গায় গাড়ি পার্কিং না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

ইএআর/এমএএইচ/জেআইএম