বিনোদন

‘মুজিব’-এ কাজের ‘তদবির’, অরণ্য আনোয়ারের ‘কষ্ট’

‘মুজিব’-এ কাজের ‘তদবির’, অরণ্য আনোয়ারের ‘কষ্ট’

‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছবিতে কাজ করতে অনেক শিল্পী অনেক কিছু করেছেন। বিনোদন অঙ্গনে কান পাতলে সেসব গল্প শোনা যায়। শেখ হাসিনার পতনের পর এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য অনেক শিল্পীকে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। তবে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন একজন! সে প্রসঙ্গে নির্মাতা অরণ্য আনোয়ার নিজের কষ্টের কথা প্রকাশ করেছেন ফেসবুকে।

Advertisement

আক্ষেপ করে অরণ্য আনোয়ার লিখেছেন, “মুজিব: একটি জাতির রূপকার”-এ অভিনয়ের জন্য অডিশন দেননি, স্ক্রিন টেস্ট দেননি, এমন অভিনয়শিল্পী খুবই কম আছেন। অনেকেরই ধারনা ছিলো, এটি ইতিহাস সৃষ্টিকারী একটা ছবি হবে। তাই ইতিহাসের অংশ হতে, এই ছবিতে ক্ষুদ্র একটা চরিত্রে হলেও সুযোগ পাওয়ার আশায় এফডিসিতে শিল্পীদের অডিশনে লম্বা লাইন পড়ে যায়।’

সিনেমায় কাজের সুযোগ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন অনেকে। সে প্রসঙ্গে অরণ্য আনোয়ার লিখেছেন, ‘অডিশন ছাড়াই সুযোগ পেতে গনভবনেও তদবির চলতে থাকে। গনভবন থেকে শ্যাম বেনেগালকে (ছবির পরিচালক) কোনো সুপারিশ করা যাবে না, এটা শোনার পর শ্যাম বেনেগালের স্থানীয় সহকারীদের কাছে তদবির শুরু হয়। এমনকি ভারতে শ্যাম বেনেগালের পরিচিত জনদের কাছেও একটু সুযোগের আশায় এদেশ থেকে সেই দেশে তদবির করেছেন অনেক শিল্পী। তবে তদবিরে এই ছবিতে সুযোগ পাননি কেউই।’

ছবিতে কাজের সুযোগকে হিমালয় জয়ের মতো এক রেকর্ড উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘সে সময় এমন একটা অবস্থা ছিলো, মুজিব ছবির অডিশনে চূড়ান্ত হওয়া মানে, সেটা হিমালয় জয়ের মতো একটা রেকর্ড। কে কোন চরিত্রে সুযোগ পেয়েছে, তা নিয়ে দিনরাত নাটকপাড়া, সিনেমাপাড়া সর্বত্র আলোচনা চলতো।’

Advertisement

ভিন্ন বাস্তবতাও আছে। এই অডিশনের প্রতিযোগিতা থেকে কেউ কেউ নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। সে গল্পের ভাগ দিয়ে অরণ্য আনোয়ার লিখেছেন, ‘এই অডিশন প্রতিযোগিতা থেকে যে দুচারজন তারকা শিল্পী নিজেদের সচেতনভাবে সরিয়ে রাখতে পেরেছিলেন, তাদেরকেও আমি চিনি। এর মধ্যে দুজন অভিনেতা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দুজনই দুই সময়ের শীর্ষ তারকা। এখানে তাদের নাম বলছি না, তবে দুজনের নামের অদ্যাক্ষরেই ম রয়েছে। এই ম-দ্বয় বিচক্ষণ, তারা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন বলেই বর্তমানের লোভ বা ভয় অথবা আভিজাত্যের হাতছানি সংবরণ করেছিলেন।’

‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় শেখ মুজিবুর রহমান চরিত্রে আরিফিন শুভ, এবং স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। সিনেমাটি মুক্তির পর, বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শুভ, তিশাকে নানা রকম সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আনোয়ার লিখেছেন, ‘আমি সেসব বিখ্যাত শিল্পীদেরও চিনি, যারা সর্বোচ্চ তদবির করেও ফজিলাতুন্নেছার চরিত্র বা মুজিব চরিত্র পাননি। আমি একা নই, আমরা অনেকেই কাছ থেকে সেসব দেখেছি। হুদাই তিশাকে দোষ দিয়েন না, শুভ বা অন্য শিল্পীদের দোষ দিয়ে চিক্কুরিয়া আসমান কাঁপাইয়েন না। ভুলে যাইয়েন না, এইটা বঙ্গদেশের আসমান। এই আসমান কখন কীভাবে কাঁপে সকলেই জানে।’

শুধু কি তাই, কেবল স্ত্রী মুজিব ছবিতে কাজ করায় মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে কটাক্ষ সহ্য করতে হচ্ছে বলেও কষ্ট পেয়েছেন অর‌ণ্য আনোয়ার। তিনি লিখেছেন, ‘কষ্ট লাগছে বেচারা ফারুকীর জন্য। কারণ আল্লামা মামুনুল হক থেকে শুরু করে মুজিব বন্দনা করে নাই, কওমী জননীতে বেঁহুশ হন নাই, এমন মানুষ অতি অল্প। কিন্তু প্রশ্নবানে, বিতর্কে আসছে কেবল ফারুকীর নাম।’

২০০৩ সালে টেলিভিশন সিরিজ ‘নুরুল হুদা’ পরিচালনা করে আলোচনায় আসেন অরণ্য আনোয়ার। ‘নুরুল হুদা একদা ভালোবেসেছিল’, ‘অতঃপর নুরুল হুদা’, ‘আমাদের নুরুল হুদা’ তাকে খ্যাতি এনে দেয়। পরে বহু একক ও ধারাবাহিক নাটক বানিয়েছেন এই নির্মাতা। ২০২১ সালে প্রথম সিনেমা নির্মাণ করেন তিনি। ‘মা’ নামের ওই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন পরীমনি।

Advertisement

এমআই/আরএমডি/জেআইএম