খেলাধুলা

মিরাজের ইনিংসটাই সব পার্থক্য গড়ে দিয়েছে: হাবিবুল বাশার

মিরাজের ইনিংসটাই সব পার্থক্য গড়ে দিয়েছে: হাবিবুল বাশার

কাকে কৃতিত্ব দেবেন বেশি-তাইজুল ইসলাম, সাদমান ইসলাম নাকি মেহেদী হাসান মিরাজকে? চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের জয়ে কার অবদান বেশী বলে মনে করেন? কে ম্যাচ ঘোরালেন?

Advertisement

তাইজুল ৬ উইকেট পেয়ে জিম্বাবুয়ের মিডল ও লেট অর্ডার মুড়িয়ে দিয়েই কি টাইগারদের ম্যাচে ফিরিয়েছেন? নাকি সাদমান ইসলামের শতরানটিই স্বাগতিকদের লিড নিতে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা? এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের ৭ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি আর বল হাতে ৫ উইকেট দখল করাই কি জিম্বাবুয়ে বধের পিছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে?

আজ বুধবার বিকেলে বাংলাদেশের টেস্ট জয়ের মুহূর্ত থেকে এ কথাগুলোই সবার মুখে মুখে। ভক্ত-সমর্থকরা সেই হিসেবই কষছেন। তিনজনের কাকে বেশি এগিয়ে রাখবেন, তা নিয়ে টাইগার সাপোর্টাররা রীতিমত দ্বিধাবিভক্ত।

অনেকের মত, তাইজুল স্পিন ভেলকি না দেখালে জিম্বাবুয়ে ২২৭ রানে আটকাতো না, তিনশোর বেশি বা সাড়ে তিনশো করে ফেলতো। তখন ম্যাচ জেতা বহুদূরে, ম্যাচে ফেরাই হতো দায়। তাই তাইজুলকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।

Advertisement

আবার অনেকের মতে, ওপেনার সাদমান ইসলাম যদি হাল না ধরতেন, ওপেনিংয়ের নেমে অনেকটা সময় উইকেটে কাটিয়ে যদি দায়িত্বপূর্ণ সেঞ্চুরি উপহার না দিতেন, তাহলে বাংলাদেশের জবাবটা ভালো হতো না।

যেহেতু প্রতিষ্ঠিত ৬ ব্যাটারের মধ্যে আর কারো ব্যাট পঞ্চাশের ঘরেও পা রাখেনি, তাই সাদমান যদি তিন অংকে পা না রাখতেন, তাহলে হয়তো বাংলাদেশও জিম্বাবুয়ের আশপাশে ইনিংস শেষ করতো। তাই সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরিটাই ম্যাচে বাংলাদেশের অবস্থান গড়ে দিয়েছে।

আবার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যারিয়ারসেরা অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সটাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাদের কথা, তাইজুল আর সাদমান যাই করুক না কেন, মিরাজের শতরান আর পরে বল হাতে জিম্বাবুয়ান ইনিংসের অর্ধেকটার পতন ঘটানোয় ম্যাচ হাতের মুঠোয় চলে এসেছে টাইগারদের। না হয় চালচিত্র ভিন্ন ও কঠিন হতে পারতো।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজকেই সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দিতে চান। তার মতে, মিরাজের পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। হাবিবুল বাশারের মূল্যায়ন, আগে-পরে অবদান আছে তাইজুল ও সাদমানের। তবে মিরাজ ওই সেঞ্চুরিটা না করলে বাংলাদেশ এতটা কমান্ডিং পজিশনে যেতে পারতো না। এভাবে জয়টা হাতের মুঠোয় চলে আসতো না। আরও কঠিন হতো। আজ বুধবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজের সাথে চট্টগ্রাম টেস্ট নিয়ে একান্তে কথা বলতে গিয়ে বাশার বলেন, ‘মিরাজের পারফরমেন্স ছিল আউটস্ট্যান্ডিং। জিম্বাবুয়ে যখন ব্যাটিং করেছে, তখন মনে হচ্ছিল তারা অনেক বেশি রান করবে। ২ উইকেটে ১৬০ , সেখান থেকে ২২০-এর আশেপাশে অলআউট করা বোলারদের ক্রেডিট। তারা দুর্দান্ত করেছে। সবাই ভালো বল করছে। মিরাজ যদিও (প্রথম ইনিংসে) উইকেট পায়নি, তারপরও ভালো বোলিং করেছে।’

Advertisement

‘নাইম হাসানও ভালো বল করেছে। তাইজুল তো প্রথম ইনিংসে অসাধারণ ছিল। তাইজুলের বোলিংয়ের মুখেই জিম্বাবুয়ের বড়সড় স্কোর গড়া হয়নি।তাইজুল অত সমীহ জাগানো বোলিংয়ের পাশাপাশি অতগুলো উইকেট না নিলে জিম্বাবুয়ের বোর্ডে আরও বড় রান থাকতে পারতো।’ হাবিবুল বাশার মনে করেন, জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসের রানটা বড় হলে এত সহজে কামব্যাক আর জেতা সম্ভব ছিল না।

সাদমানের প্রশংসা করে বাশার বলেন, ‘সাদমানের ইনিংসটা খুব ভালো ছিল। আমাদের শুরু ভালো করতে ভূমিকা রেখেছে। তবে মিরাজের ইনিংসটাই মেড অল দ্য ডিফারেন্স। ওইখান থেকেই আমাদের ইনিংসটা বড় হয়েছে। আর তাতেই জিম্বাবুয়ের হাত থেকে ম্যাচ সরে যেতে থাকে। মিরাজের ব্রিলিয়ান্ট সেঞ্চুরি আর তানজিম সাকিবের সাথে জুটিটা আমাদের অনেকদূর এগিয়ে দিয়েছে। সেটা আমাদের ম্যাচ নিশ্চিত করতে রেখেছে প্রধান ভূমিকা। ওই ইনিংসটা না হলে হয়ত জিততাম। তবে এত সহজে ও বড় ব্যবধানে না। তখন হয়তো কিছু রান চেজও করতে হতো।’

‘মিরাজের ওই সেঞ্চুরিটাই জিম্বাবুয়েকে টেস্ট ম্যাচ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করা কঠিন হবে, সেটা জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। বল টার্ন করছিল। তবে আমাদের লিডটা বড় হওয়ায় জিম্বাবুয়ের ম্যাচ বাঁচানোর সব পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। মিরাজের ওই ইনিংসটা ভেরি ইম্পরটেন্ট’-যোগ করেন বাশার।

এআরবি/এমএমআর/এমএস