খেলাধুলা

আবাহনীর চার স্পিনারই পার্থক্য গড়ে দিলেন

আবাহনীর চার স্পিনারই পার্থক্য গড়ে দিলেন

সকালে ওপেনার রনি তালুকদারের হাত ধরে শুরুটা ভালই করেছিল মোহামেডান। আবাহনী পেসার রিপন মন্ডলের করা দিনের প্রথম ওভারে রনি তালুকদার তিন বাউন্ডারিতে ১৫ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিলেন। পাওয়ার প্লে’র প্রথম ১০ ওভারে মোহামেডানের রান ছিল ১ উইকেটে ৫৬। দেখে মনে হচ্ছিল চির প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে বড়সড় স্কোর গড়তে যাচ্ছে সাদা-কালো শিবির।

Advertisement

কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে মোহামেডানের রানের গতি কমতে থাকে। তারপর ম্যাচ যত এগিয়েছে তত আবাহনীর স্পিনাররা রানের লাগাম টেনে ধরলেন মোহামেডানের। প্রথম ১২ নম্বর ওভার পর্যন্ত ২ পেসার রিপন মন্ডল আর মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী শেষ একসঙ্গে বোলিং করেছেন।

তারপর আর কখনোই দুই পেসারকে দুদিকে একত্রে বোলিংয়ে আনেননি আবাহনী ক্যাপ্টেন মোসাদ্দেক। আবাহনীর ৪ স্পিনার রাকিবুল, মোসাদ্দেক, মাহরুব রাব্বি ও মেহরুব ১৩ থেকে ৩৭ ওভার পর্যন্ত টানা বোলিং করে মোহামেডানের রান গতি নিয়ন্ত্রনে রাখেন।

তাদের মাপা বোলিংয়ের মুখে সিঙ্গেলস তুলতেও রীতিমত কষ্ট হয় মোহামেডান মিডল অর্ডারের। তার প্রমাণ অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দুই অংকে পৌঁছাতে লাগে ২৭ বল।

Advertisement

তারপরও রিয়াদ ঠিকই ফিফটি (৬২ বলে ৫০) হাঁকান। সাথে আরিফুলের ব্যাট থেকেও আসে ৫২ রানের (৫৭ বলে) ইনিংস। এছাড়া রনি তালুকদার ৪৭ বলে ৪৫ আর ফরহাদ হোসেন ৫৬ বলে ৪২ রানের দুটি সহায়ক ইনিংস খেলেন।

কিন্তু কেউই ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলতে পারেননি। আগেই আউট হয়ে গেছেন। শেষদিকে রান গতি একটু বাড়লেও একদম ডেথ ওভারে মোহামেডানের ২ বোলার সাইফউদ্দিন আর নাসুম হাত খুলে খেলতে ব্যর্থ হলে শেষ দিকে মোহামেডানের রানের গতি একদম কমে যায়। শেষ দিকে ৪ উইকেট হাতে রেখে ১৩ বলে ১২ রান তোলে মোহামেডান।

৪ স্পিনার তাই স্কোরটা ২৪০-এ স্থির থাকে। আবাহনীর ৪ স্পিনার রাকিবুল (১০ ওভারে ০/৩৬), মাহফুজ রাব্বি (১০ ওভারে ১/৩৮), মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (১০ ওভারে ২/৩৯) ও মেহরুব হোসেন (৫ ওভারে ১/২৬) ৩৫ ওভার বল করে রান দিয়েছেন ১৩৯। ওভার পিছু ৩.৯৭ করে।

সেখানে মোহামেডান খেলেছে মাত্র ২জন স্বীকৃত স্পিনার নাসুম আহমেদ আর নাবিল আহমেদকে নিয়ে। পার্থক্যটা ঠিক সেখানেই গড়ে উঠেছে। যেখানে আবাহনীর স্পিনাররা মোহামেডান ইনিংসের ৩৫ ওভার বল করে ওভার পিছু ৪ রানের কম দিয়েছেন। সেখানে আবাহনীর ২ মিডল অর্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর মোহাম্মদ মিঠুনকে ঠেকাতে মোহামেডান ক্যাপ্টেন রনি তালুকদারের হাতে সে অর্থে স্পিন অপশনই ছিলনা।

Advertisement

কারণ, মোহামেডান লাইন আপে কোন অফস্পিনারই ছিলেন না। আজকাল অনিয়মিত হয়ে ওঠা রিয়াদ ৫ ওভার বল করে ১৭ রান দিয়ে উইকেট পাননি। বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ৯ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে একা ২ উইকেট পেয়ে মোহামেডানের সেরা বোলার।

অপর বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদ একদমই সুবিধা করতে পারেননি। তার ৩ ওভারে ২৭ রান তুলে নেয় আবাহনী ব্যাটাররা। সেখানেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে ওঠে। প্রচন্ড গরমে চার চারজন স্পিনার খেলানো এবং কম পেস নির্ভরতা আবাহনীর সাফল্যে রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আর সেখানে ৭ নির্ভরযোগ্য পারফরমার ছাড়া এদিক-ওদিক হাতড়ে একাদশ সাজানো মোহামেডান হয়ে ওঠে অফস্পিনারশূন্য দল।

নাসুমের সাথে যে নাবিল সামাদ শেষ ৪ ম্যাচ খেলেছেন, তিনিও দল বদলের সময় কোন দল পাচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়ে তাকে নিতে হয়; কিন্তু নাবিল সামাদ তার অন্তর্ভুক্তির যথার্থতার প্রমাণ দিতে পারেননি। অলিখিত ফাইনালে স্পিনকেন্দ্রিক আবাহনীর সাফল্যের বিপরিতে পেস নির্ভরতা ডোবালো মোহামেডানকে।

এআরবি/আইএইচএস