খেলাধুলা

শেষ সেশনে ব্যাটিং ধস, লিড নিয়েও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

শেষ সেশনে ব্যাটিং ধস, লিড নিয়েও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম টেস্টে ৩ উইকেটে ২০৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের চা-বিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। বড় লিডের স্বপ্ন ছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু শেষ সেশনে এসে ব্যাটিং ধসের মুখে পড়তে হলো নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে।

Advertisement

এই সেশনে ৩০ ওভারে মাত্র ৮৬ রান তুলতে গিয়ে ৪টি উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২৫৯ থেকে ২৭৯-এই ২০ রানের মধ্যেই ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট খোয়ায় টাইগাররা।

৭ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। এখন তাদের লিড ৬৪ রানের। উইকেটে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ১৬ আর তাইজুল ইসলাম ৫ রান নিয়ে।

আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ৯ উইকেটে ২২৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে জিম্বাবুয়ে। সফরকারীদের প্রত্যাশা ছিল, শেষ উইকেটে আরও কিছু রান যোগ করার।

Advertisement

তবে ক্রেইগ আরভিনের দলকে নতুন দিনে কোনো রান করতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের প্রথম বলেই ব্লেসিং মুজারাবানিকে আউট করেন তাইজুল ইসলাম। জিম্বাবুয়ে ব্যাটারকে উইকেটরক্ষক জাকের আলীর ক্যাচ বানান বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম আউট দিতে না চাইলেও বাংলাদেশি ফিল্ডারদের কড়া আবেদনের প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত বদল করেন আম্পায়ার।

প্রথম ইনিংসে ৯০.১ ওভারে ২২৭ রানেই অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। টাইগার বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৬০ রানে শিকার করেন ৬টি উইকেট।

এরপর ব্যাট হাতে বাংলাদেশকে দারুণ সূচনা করে দেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয়। উদ্বোধনী জুটিতে ১১৮ রান করেন তারা।

তবে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির সম্ভাবনা তৈরি করেও পারেননি দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা বিজয়। ৮০ বলে ৩৯ রান করে ব্লেসিং মুজারাবানির এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে উইকেট হারান তিনি। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। ভাগ্যের সহায়তা না পেয়ে মন খারাপ করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বিজয়কে।

Advertisement

৩৯ রানের ইনিংসটিই ডানহাতি ব্যাটারের ক্যারিয়ারসেরা টেস্ট ইনিংস। এর আগে বিজয়ের সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ২৩ রানের। যা ২০২২ সালের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেছিলেন গ্রস আইল্যান্ডে। এরপরই জাতীয় দলের লাল বলের ক্রিকেট থেকে বাদ পড়েছিলেন বিজয়।

দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুল হককে নিয়ে ৭৬ রানের জুটি করেন সাদমান। ইনিংসের ৫৪তম ওভারে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার শেষ বলে বেন কারেনের হাতে ক্যাচ হন মুমিনুল হক। এতে জুটি ভাঙে। ৬৪ বলে ৩৩ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটার।

পরের ওভারের প্রথম বলেই ব্রায়ান বেনেটের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন সেঞ্চুরি সাদমান ইসলাম। টানা দুই বলে দুই সেট ব্যাটারকে হাঁরিয়ে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। বাঁহাতি টাইগার ব্যাটার করেন ১৮১ বলে ১৬ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ১২০ রান। এটি সাদমানের টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।

সাদমান লাল বলে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান হারারেতে ২০২১ সালে। অর্থাৎ তার দুটি সেঞ্চুরিই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। টেস্ট ক্যারিয়ারে ২২তম ম্যাচে এসে বাঁহাতি ব্যাটার আজ ছুঁয়েছেন ১০০০ রানের মাইলফলকও।

এরপর ঝলক দেখান অভিষিক্ত লেগস্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকেসা। ৮ রানের মধ্যে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর জাকের আলীকে তুলে নেন তিনি।

শান্তর আউট হওয়ার ধরন বরাবরের মতো প্রশ্নবিদ্ধ। শর্ট মিডউইকেটে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে আসেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫৪ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান।

এরপর জাকেরও মাসেকেসার ঘূর্ণি বুঝতে না পেরে ফিরতি ক্যাচ দেন। ১৩ বলে জাকের করেন ৫ রান। মাসেকেসার পরের ওভারেই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম কাটা পড়েছেন রানআউটে। মিডঅনে ঠেলে দিয়েই দ্রুত সিঙ্গেল নিতে গিয়েছিলেন। সরাসরি থ্রোতে ননস্ট্রাইকের স্টাম্প ভেঙে দেন মাদভেরে। ৫৯ বলে মুশফিকের ৪০ রানের ইনিংসে ছিল ৪টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কার মার।

মাসেকেসার তৃতীয় শিকার হন নাঈম হাসান। স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি ৩ করেই। এরপর ৪ ওভার কাটিয়ে ১২ রান যোগ করেছেন মিরাজ আর তাইজুল।

এমএমআর/এএসএম