পাহাড় ডাকে, কখনো নিঃশব্দে, কখনো শুকনো পাতার মর্মর ধ্বণিতে, কখনো ঝরনার কলকল শব্দে, কখনো হিমবাহের গর্জনে। সেই ডাক যে একবার শুনেছে; সে আর কখনো আগের মতো থাকতে পারে না। ‘সি টু সামিট এভারেস্ট অভিযান’ আমার জন্য ঠিক তেমনই এক অন্তরযাত্রা, সমুদ্রতল থেকে শিখরে ওঠার বাহ্যিক প্রয়াসের আড়ালে এক আত্মঅন্বেষণের উপাখ্যান।
Advertisement
এই অভিযানের শুরু হয়েছিল সমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে একটি প্রশ্ন নিয়ে, আমরা প্রকৃতিকে কতটা সম্মান করি? আমাদের জীবনযাত্রা কি প্রকৃতির ভারসাম্যকে লঙ্ঘন করে চলেছে? একবার উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমি যাত্রা শুরু করলাম, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ কেবল উচ্চতার দিকে নয় বরং অন্তরের গভীরতার দিকেও এগিয়ে নিয়ে গেল।
হিমালয়—এই এক শব্দেই জড়িয়ে আছে শীতলতার মোহ, বিশালতার ভয় আর এক অপার বিস্ময়ের মায়া। যত ওপরে উঠি; তত যেন পৃথিবীর কোলাহল মুছে যেতে থাকে। পাইন গাছের ছায়া, বরফে মোড়ানো চূড়ার ঝিলমিলে আলো আর সেই অজস্র নাম না-জানা পাখির ডাক। সব মিলিয়ে হিমালয় যেন এক জীবন্ত উপন্যাস, প্রতিটি পৃষ্ঠায় রহস্যে মোড়া এক নতুন জীবনচিত্র।
তবু এই পাহাড় শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয়। এখানে যারা বাস করে, তারা প্রকৃত অর্থেই জীবনকে জানে। হিমালয়ের কোলে থাকা সেই সহজ-সরল মানুষগুলোর মুখে যে হাসি, তা শহুরে বিলাসিতায় হারিয়ে ফেলা এক প্রাচীন মানবিকতার প্রতিচ্ছবি। তারা চায় না বেশি কিছু। কেবল শান্তি, প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঁচা। এই মানুষগুলোই আমায় শিখিয়েছে, প্রকৃত শক্তি আসে সরলতা থেকে আর প্রকৃত উন্নতি আসে নিজের প্রয়োজন সীমিত রাখার শিল্প থেকে।
Advertisement
আরও পড়ুন
বিশ্বরেকর্ড গড়ার মিশনে পর্বতারোহী শাকিলের পাশে প্রাণ কক্সবাজার থেকে হেঁটে এভারেস্ট যাবেন শাকিল‘সি টু সামিট’ কেবল এক অভিযানের নাম নয়, এটি এক আহ্বান। আমি চাই, এই অভিযাত্রার গল্পে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের তরুণ প্রজন্ম ভাবতে শিখুক—কীভাবে তারা তাদের জীবনে সচেতনতা, মানবিকতা ও পরিবেশের প্রতি ভালোবাসাকে স্থান দিতে পারে। একবার যদি তারা প্রকৃতির কাছে মাথা ঝুকিয়ে শোনে, তবে তারা বুঝবে—সবচেয়ে উঁচু শিখর আসলে আমাদের ভেতরে।
আমার লক্ষ্য, একটি এমন ভবিষ্যৎ গড়া, যেখানে আমরা উন্নতির নামে প্রকৃতিকে ধ্বংস করবো না বরং তার সঙ্গে মিতালি করে একসাথে এগিয়ে যাবো।
হিমালয়ের শীতল হাওয়া যখন আমার মুখ ছুঁয়ে যায়, আমি বুঝি—জীবন আসলে ঠিক কতটা বিশুদ্ধ হতে পারে। আর সেই বিশুদ্ধতার খোঁজেই আমি হাঁটছি—সমুদ্র থেকে শিখর পর্যন্ত।
Advertisement
এই যাত্রাপথের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শীর্ষস্থানীয় ফুড ব্র্যান্ড ‘প্রাণ’। স্ন্যাকস পার্টনার নুডলস ব্র্যান্ড ‘মিস্টার নুডলস’। রেডিও পার্টনার জাগো এফএম, নিউজ পার্টনার জাগোনিউজ২৪.কম। গিয়ার পার্টনার মাকালু-ই-ট্রেডার্স নেপাল। ওরাল হেলথ পার্টনার সিস্টেমা টুথব্রাশ।
এসইউ/এমএস