টানা নয় কার্যদিবস দরপতনের পর দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। রোববার (২৭ এপ্রিল) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে সবকয়টি মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
Advertisement
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। বাজারটিতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে সিএসইতে টানা ১০ কার্যদিবস দরপতন হলো।
এর আগে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবস এবং তার আগে সপ্তাহে চার কার্যদিবস অর্থাৎ টানা নয় কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এ পরিস্থিতিতে রোববার (২৭ এপ্রিল) ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫০ পয়েন্ট কমে যায়। ফলে আবারও দরপতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু শেষ ঘণ্টার লেনদেনে বদলে যায় বাজারের চিত্র।
Advertisement
দাম কমার তালিকা থেকে বেরিয়ে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। দুপুর ১টার পর থেকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকয়টি মূল্যসূচক বেড়েই ডিএসইতে লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলিয়ে ডিএসইতে ২৩৫ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৯টির। এছাড়া ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১১৯টির শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং ৬৫টির দাম কমেছে। এছাড়া ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৬৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ১১টির দাম কমেছে এবং ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
আরও পড়ুন
Advertisement
এছাড়া বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া ১৪টি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে ৯টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সার্বিকভাবে দাম বাড়ার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৯৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১০৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৫২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৬৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিচ হ্যাচারির শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৪৪ টাকার। ১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাহাজিবাজার পাওয়ার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, গ্রামীণফোন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, মীর আকতার, শাইনপুকুর সিরামিক, ফাইন ফুডস এবং রিলায়েন্স ওয়ান দ্য ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্সুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৯৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০০টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
এমএএস/কেএসআর/এমএস