আন্তর্জাতিক

পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি বাদ দিতে হবে ইরানকে

পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি বাদ দিতে হবে ইরানকে

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে কোনো চুক্তি করতে হলে কিংবা সামরিক হামলার ঝুঁকি এড়াতে ইরানকে সব ধরনের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি পুরোপুরি বাতিল করতে হবে জানিয়েছেন মার্কিন পররারষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

Advertisement

রুবিও জানান, ইরান যদি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করে একটি চুক্তি করতে চায়, তাহলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মতো পারমাণবিক কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে এতে সামরিক হামলার ঝুঁকিও এড়াতে সক্ষম হবে তেহরান।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরান যদি শান্তিপূর্ণ পারমানবিক কর্মসূচি চায়, তারা সেটি করতেই পারে। তবে সেক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের মতো সমৃদ্ধ উপাদানগুলো (ইউরেনিয়াম) আমদানি করতে হবে।

এদিকে ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে তারা শান্তিপূর্ণভাবেই পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনা করে। সক্ষমতা থাকলেও তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো চেষ্টা করেনি। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বাতিলের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে তেহরান।

Advertisement

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করার লক্ষ্যে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের করে নিয়ে আসে। দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফিরেই ইরানকে চাপে ফেলতে আরও কঠিন শর্ত দিয়ে একটি চুক্তির সম্পাদনের উদ্যোগ নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প গত ৫ মার্চ ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে আলোচনায় আসার জন্য একটি চিঠি লেখেন। পরদিন টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এসে নিজেই বলেন, আমি তাদের একটি চিঠি লিখেছি। চিঠিতে বলেছি, আপনারা আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন, নাহলে আমরা সামরিক হামলা চালাতে বাধ্য হবো। সেটি কিন্তু খুব খারাপ হবে।

প্রথমে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করলেও এরই মধ্যে দুই দফা আলোচনা হয়েছে দেশ দুটির মধ্যে। চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ কৌশলগত আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়া কথা রয়েছে। নিজেদের অর্থনীতির উন্নতির লক্ষ্যে ইরান এমন একটি চুক্তি চায়, যেখানে দেশটির ওপর চলমান নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, ইরানের সঙ্গে কোনো চুক্তি হওয়া থেকে এখনো অনেক দূরে রয়েছি আমরা। কোনো চুক্তি আদৌ হবে কিনা, তা-ও বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা চাই একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান।

Advertisement

মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে জর্জরিত পরিস্থিতি উল্লেখ করে রুবিও বলেন, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যকোনো শক্তি যদি ইরানের হামলা চালায়, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইলেই হামলা চালাতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা না করে শান্তিপূর্ণ সমাধানকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

এর আগে, গত সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে আলোচনা শেষে ইরান চাইলে সীমিত আকারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালু রাখতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিফ উইটকফ। তবে এতে আপত্তি জানায় অনেক রক্ষণশীল আমেরিকানসহ ইসরায়েল। পরে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, চুক্তি করতে হলে ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।

এমএসএম