ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পরিচয়হীন অবস্থায় পাওয়া দুই নবজাতকের মধ্যে এক নবজাতককে দত্তক দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ শিশু কল্যাণ বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক রাজু আহমেদ।
তিনি বলেন, হাসপাতালে দুটি নবজাতক ছিল। গণমাধ্যমে (জাগো নিউজ) এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় জানাজানি হয়। নবজাতক দুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য ৯ জন ব্যক্তি জেলা প্রশাসক বরাবর ময়মনসিংহ শিশু কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করেন। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই করে বুধবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলার এক নিঃসন্তান দম্পতিকে প্রায় দুই মাস বয়সী একটি মেয়ে নবজাতককে দত্তক দেওয়া হয়েছে। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ আমরা উপস্থিত ছিলাম।
উপপরিচালক রাজু আহমেদ আরও বলেন, দত্তক নেওয়া ব্যক্তি একজন ব্যবসায়ী। ময়মনসিংহ শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভাপতি জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের নির্দেশে একটি নবজাতক দত্তক দেওয়া হয়েছে। নবজাতকটি আদর-যত্নে বড় হয়ে পড়ালেখার মাধ্যমে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমাজের কল্যাণে কাজ করবে বলে আশা করছি।
Advertisement
আরও পড়ুন
ময়মনসিংহ মেডিকেলে পরিচয়হীন দুই নবজাতকতিনি আরও বলেন, হাসপাতালে থাকা আরেকটি মেয়ে নবজাতক কিছুটা অসুস্থ। তাকে হাসপাতালের ২৫ নম্বর নবজাতক ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরিপূর্ণ সুস্থ করতে চিকিৎসক-নার্সরা আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছেন। সে সুস্থ হলে বাকি আবেদনগুলো আরও যাচাই-বাছাই করা হবে। এই নবজাতককেও দত্তক নিতে চাইলে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করতে হবে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, নবজাতক দুটি পাওয়ার পর চিকিৎসক ও নার্সরা যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন। তাদের সবসময় যত্ন করেছেন নার্সরা। বর্তমানে পরিচয়হীন অবস্থায় হাসপাতালে থাকা অন্য নবজাতকটিকেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গত ৭ এপ্রিল ‘ময়মনসিংহ মেডিকেলে পরিচয়হীন দুই নবজাতক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে জাগো নিউজ। এতে বলা হয়, ৭ মার্চ হাসপাতালের টয়লেটে পড়ে ছিল একটি নবজাতক। একজন কর্মচারী দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এরপর ভর্তি করার পর তাকে ২৫ নম্বর নবজাতক ওয়ার্ডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়। এই নবজাতক পাওয়া যাওয়ার কিছুদিন আগে আরও দুটি নবজাতক পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে একটি নবজাতক মারা যায়। অবৈধ মেলামেশায় সন্তান জন্মের পর হাসপাতালে ফেলে চলে যাওয়া হয়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
Advertisement
এ নিয়ে জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশের পর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হাসপাতালে পরিচয়হীন অবস্থায় দুই নবজাতক থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর দত্তক নিতে একে একে আবেদন করা হয়।
কামরুজ্জামান মিন্টু/ইএ