উম্মে সালমা
Advertisement
সময় ঠিক ৫টা। ঘুম থেকে উঠেই নামাজ পড়লাম। নামাজ শেষে বসে পড়লাম কখন বের হবো সেই আশায়। অনেকটা এক্সাইটমেন্ট কাজ করছিল। বার বার মনে হচ্ছিল, সময়টা আসতে কেন এত দেরি হচ্ছে? ভাবছি, ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে কি ৭টায় নিয়ে আসবো!
দিনটি ছিল ১৮ এপ্রিল। বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আনন্দভ্রমণের দিন। আনন্দভ্রমণের স্পট ছিল সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড় ও গুলিয়াখালী সৈকত। এতে অনেক দূর থেকে আসছেন সদস্যরা। বিভিন্ন জেলা থেকে উপভোগ করতে এসেছেন ফোরামের গুণী লেখকেরা। সাথে আছেন জেলার কমিটির সদস্যরা। যাদের উপস্থিতি এ আয়োজনকে আরও মনোমুগ্ধ করেছে।
আমি তৈরি হয়ে ৭টার দিকে রওয়ানা দিলাম চট্টগ্রামের নিউ মার্কেটে। সেখান থেকে গেলাম টাইগার পাস মোড়ে। সেখান থেকেই আমাদের বাস ছাড়া হবে। গিয়ে দেখি অর্থ-সম্পাদক হুমায়রা খানম জেরিন সবাইকে রিসিভ করতে দাঁড়িয়ে আছেন। কিছুক্ষণ পর পর একজন করে আসতে আসতে জায়গাটা পরিপূর্ণ হয়ে গেলো।
Advertisement
ঢাকা থেকে আগতদের মধ্যে উপস্থিত হোন সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা লাইজু আক্তার, সাবেক সহ-সভাপতি জাবেদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক তানজিদ শুভ্র প্রমুখ। তারা স্টেশন থেকে চলে এসেছেন টাইগার পাসে। কক্সবাজার থেকে এসেছেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তারেক আল মুনতাছির।
আনন্দভ্রমণের সম্পূর্ণ আয়োজন করেন সভাপতি মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন ছিদ্দিকী। তিনি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রামের টিম লিডার আরমান রাকিব আসার পর টাইগার পাস থেকে গাড়ি ছাড়া হয়। গাড়ি ছাড়ার কিছুক্ষণ পর যোগ দেন সাবেক সভাপতি আজহার মাহমুদ। গাড়ি চলছে তার গন্তব্যের দিকে।
আরও পড়ুন
বাড়বকুণ্ড সমুদ্রসৈকতে চড়ুইভাতি প্রকৃতির কোলে অগ্নিপ্রভার উচ্ছ্বাসগাড়িতে চলছে হই-হুল্লোড় ও আনন্দময় আড্ডা। গানের মাধ্যমে আরও বেশি জমে উঠেছে আনন্দযাত্রা। ফেনীতে ঢুকতেই আমাদের সাথে যোগ দেন সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল হক সায়েম এবং দপ্তর সম্পাদক সফিউল ইসলামসহ ফেনীর সদস্যরা।
Advertisement
সীতাকুণ্ড পৌঁছে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পার্কিংয়ে গাড়ি রাখা হয়। তখন ১০টা। সবাই গাড়ি থেকে নেমে যান। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করেন। এরপর ফটোশুট করে রওনা দেন পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার জন্য। অনেকেই অর্ধেক উঠে নেমে যান। বাকিরা সম্পূর্ণ চূড়ায় ওঠেন। পাহাড়টি ১২০০ ফুট। যারা সর্বোচ্চ উঠেছেন, সেখানে রেস্ট নিয়ে, ফটোশুট করে আনন্দচিত্তে নেমে আসেন। তাদের মুখে রাজ্যজয়ের হাসি দেখে বাকিরাও খুশি।
সেখান থেকে সীতাকুণ্ড বাজারের একটি রেস্তোরাঁয় লাঞ্চ করে নেন। লাঞ্চ করে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে গাড়ি চললো গুলিয়াখালী সৈকতের দিকে। বিচে গিয়ে সবার মন ভরে যায়। হাসিখুশি ভাবে যে যার মতো আনন্দ করছেন আর ফটোশুট করছেন। হঠাৎ কালো মেঘ করে আসে অঝোর বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিতে লেখকেরা হয়ে গেলেন একেকজন খেলোয়াড়। ফুটবল খেলায় মেতে তাদের শৈশবে ফিরে যান।
সন্ধ্যা নেমে এলে এবার বাড়ি ফেরার পালা। হালকা বৃষ্টিতে ভিজে সবাই গাড়িতে ওঠেন। গাড়িতে আবারও আনন্দযজ্ঞ শুরু হয়। কুইজ প্রতিযোগিতা পর পুরস্কারও দেওয়া হয়। এরপর একেকজন নেমে পড়লেন তাদের গন্তব্যে। এভাবেই শেষ হলো একটি অনবদ্য দিন। দিনটি স্মৃতির পাতায় আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
লেখক: সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
এসইউ/এমএস