দেশজুড়ে

সিলেটে সাক্ষী না আসায় পেছাল আলোচিত দুই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

সিলেটে সাক্ষী না আসায় পেছাল আলোচিত দুই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

সাক্ষী না আসায় পিছিয়েছে সিলেটের আলোচিত দুই মামলার তারিখ। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা এবং সাবেক মন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।

Advertisement

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দুটির পৃথকভাবে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আসামিদের আদালতে তোলা হয়। কিন্তু সাক্ষী অনুপস্থিত থাকায় বিচারক স্বপন কুমার সরকার মামলা দুটির পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন। এর আগে গত ৮ এপ্রিল আদালতে দুই মামলায় পাঁচজনে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল।

সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আবুল হোসেন জানান, দুই মামলা ১৪ জনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। যার কারণে আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখে পিছিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, মামলার জামিনে থাকা আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরও আদালতে উপস্থিত হননি। তিনি আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করেছেন। এছাড়াও মামলায় কারাগারে থাকা অন্যান্য আসামি এবং জামিনে থাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গৌছসহ ১২ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ওই হামলায় তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। এছাড়াও আহত হন আরও অন্তত ৭০ জন।

ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। ওই অভিযোগপত্রের বিষয়ে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ। পরে মামলা পুনঃতদন্তের পর ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা ১৬ বাড়িয়ে ২৬ জনের নামে দ্বিতীয় দফা অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় নিহত কিবরিয়ার পরিবার।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

এ মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক ও হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র জি কে গৌছ, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৩ জন জামিনে রয়েছেন। বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে সাতজন পলাতক এবং মিজানুর রহমান মিটু, হাফেজ সৈয়দ নাঈম আহমদ আরিফ ওরফে নিমু, মাওলানা শেখ ফরিদ আহমদ, আব্দুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আবু জান্দালসহ অন্যরা কারাগারে রয়েছেন।

Advertisement

অপরদিকে ২০০৪ সালের ২১ জুন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাইবাজারে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। সেদিন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গ্রেনেড বিস্ফোরণে যুবলীগের এক কর্মী ঘটনাস্থলে নিহত ও ২৯ জন আহত হন। এদিন অল্পের জন্য রক্ষা পান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ওই ঘটনায় দিরাই থানার এসআই হেলাল উদ্দিন অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর লুৎফুজ্জামান বাবর, আরিফুল হক চৌধুরীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১২৩ সাক্ষী রয়েছেন। এর মধ্যে ৫২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আহমেদ জামিল/এএইচ/এমএস