রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা মামলায় মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী কাওয়াই প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং সানজানা ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. দেওয়ান সমিরকে (৫৮) ফের চারদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
Advertisement
এ মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সমিরকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মোরশেদ আলম তাকে ফের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
এসময় পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দেশে আসা রাষ্ট্রদূতদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশ্য রাষ্ট্রদূতদের কাছে দেশের ইমেজ নষ্ট করা। এর পেছনে দেশীয় ছাড়াও আন্তর্জাতিক চক্র কাজ করছে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেশের শ্রমবাজার নষ্ট করছে চক্রটি।
আরও পড়ুন মডেল মেঘনার ব্যাংক হিসাব তলব প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার মেঘনা আলমসমিরের আইনজীবীরা বলেন, মেঘনার সঙ্গে সমিরের কোনো সম্পর্ক নেই। সমির একজন রেমিট্যান্সযোদ্ধা। তিনি দেশের স্বার্থে কাজ করছেন। কিন্তু তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। মেঘনা আলমের সঙ্গে কোনো রাষ্ট্রদূতের সম্পর্ক থাকলে সেটির জন্য কি সমির দায়ী? পত্রপত্রিকায় মেঘনার সঙ্গে সমিরের বিভিন্ন সম্পর্ক উল্লেখ করা হচ্ছে। কিন্তু এগুলো সব মিথ্যা।
Advertisement
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সমিরের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল সমিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তবে তিনদিনের রিমান্ড শেষ হলে পুনরায় তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মেঘনা আলম ও দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতপরিচয় দুই থেকে তিনজন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক বা প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে কৌশলে অবৈধ পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে তাদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছে।
দেওয়ান সমির কাওয়াই গ্রুপ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের ফার্মের মালিক বলে জানা যায়। এছাড়া এর আগে মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল তার।
Advertisement
আকর্ষণীয় ও স্মার্ট মেয়েদের দেওয়ান সমিরের প্রতিষ্ঠানে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছে সহজে যাতায়াত নিশ্চিত করা হতো। এছাড়া তার ম্যানপাওয়ার ও অন্য ব্যবসা অধিকতর লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানোর লক্ষ্যে চক্রান্তের অংশ হিসেবে অসৎ উদ্দেশে তার সহযোগী আসামিদের সহায়তায় বিভিন্ন কূটনীতিককে টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করে আদায় করা হতো।
এর আগে গত ১০ এপ্রিল মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে ডিটেনশন আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেঘনাকে আদালতে হাজির করে আটক রাখার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এমআইএন/এমকেআর/এএসএম