পহেলা বৈশাখে বেড়ে যায় মাটির তৈরি হাড়ি-পাতিলের কদর। তবে এই কদর ধীরে ধীরে কমে আসছে বলে আক্ষেপ মৃৎশিল্প দোকানিদের। তারা বলছেন, এখন আর মাটির জিনিস চলে না, সবাই খোঁজে কমদামি টেকসই জিনিস।
Advertisement
বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর সংলগ্ন মৃৎশিল্প কেনাবেচার দোকানগুলোতে সরেজমিনে দেখা যায়, এবারের নববর্ষ ঈদের পরপরই হওয়ায় তেমন কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ক্রেতারা। সবাই ঝুঁকছেন টেকসই জিনিসের দিকে।
তারা বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তারা এবার কুলা, চালন, পুতুল, কলস, পাতিল বেশি করে দোকানে তুলেছেন। তবে এবার ক্রেতা সংকট রয়েছে। বিশেষ করে করোনা পরবর্তী সময়ে মাটির জিনিসের কদর নেই বললেই চলে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাজে অবস্থা।
সাইফুল ইসলাম নামের একজন দোকানি বলেন, ‘করোনার আগেও আমরা একসঙ্গে ৫০০ পিস, এক হাজার পিস কুলা/চালনের অর্ডার পেতাম। তবে করোনার পর আর পাইনি। এ বছরই তার ব্যতিক্রম নয়। যারা কিনতে আসছে তারাও চার-পাঁচ পিসের বেশি কিনছেন না।’
Advertisement
মো. আলামিন নামের একজন দোকানি বলেন, ‘এক মাস আগে দোকানে নতুন পণ্য উঠিয়েছি। অন্য বছরের তুলনায় এবারের ক্রেতা কম। তবে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ক্রেতার সংখ্যা অল্প বেড়েছে। যদিও তা অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম।’
মৃৎশিল্পী মিল্লাত হোসেন টিটু বলেন, ‘সরকার পতনের পর থেকে আমাদের বিক্রি অনেকটাই কমে গেছে। অনেক রাজনৈতিক নেতা আমাদের এখানে অর্ডার দিতেন কিন্তু সরকার পতনের পর আমরা তেমন বড় কোনো অর্ডার পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারিতে আমাদের বিক্রি অনেক বেশি থাকে। তবে এবার আমরা তেমন বিক্রি করতে পারিনি। কারণ একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে খুব একটা অনুষ্ঠান হয়নি।’
নওয়াব আলী নামের আরেক দোকানদার বলেন, ‘বেচাকেনা নেই বললেই চলে। রমজান মাসে বাড়ি থেকে টাকা এনে সংসার চালিয়েছি। সারাদিন দোকানদারি করে এক হাজার টাকারও বিক্রি হয় না। অন্য বছর এ সময় দিনে ৫০ অথবা ৬০টা ফুলদানি বিক্রি হতো। আর এবার পুরো ফেব্রুয়ারি মাসে ৫০টা ফুলদানিও বিক্রি করতে পারিনি।’
Advertisement
সামিম ইব্রাহিম নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘আমরা এখানে কেনাকাটা করতে এসেছি। নববর্ষ উপলক্ষে কিনতে আসিনি। তাছাড়া নববর্ষের সময় এসএসসি পরীক্ষা থাকায় তারা হয়ত এটিতে এত বেশি উচ্ছ্বসিত হচ্ছে না।’
ক্রেতা আমিনুল হক বলেন, ‘নববর্ষ উপলক্ষে এক বিদেশি বন্ধুর জন্য মাটির প্লেট কিনতে এসেছি। আমার মাটির জিনিসে তেমন আগ্রহ নেই।’
এফএআর/এমআরএম/এএসএম