জাতীয়

কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না পেলেও ভিড় বেড়েছে গাবতলীতে

কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না পেলেও ভিড় বেড়েছে গাবতলীতে

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে বাড়ি ছুটছে মানুষ। তবে বিগত দিনগুলোতে গাবতলীতে আশানুরূপ চাপ না থাকলেও সকাল থেকে যাত্রীর উপস্থিত বেড়েছে বলে জানিয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তবে যাত্রীর চাপ বাড়লেও কোনো রুটেই অতিরিক্ত গাড়ি দেওয়া লাগছে না বলেও জানান তারা। একই সঙ্গে আজও অধিকাংশ কাউন্টারে টিকিট মিলছে বলে ভাষ্য তাদের।

Advertisement

শনিবার (২৯ মার্চ) গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, আসন্ন ঈদ যাত্রায় বিগত দিনগুলোতে আশানুরূপ যাত্রী না থাকার কথা জানানো হলেও আজ গাবতলী বাস টার্মিনালে মোটামুটি যাত্রীর চাপ দেখা গেছে। কোনো কোনো কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের ভিড়ও দেখা গেছে। তবে বিগত বছরগুলোর মতো যাত্রীদের উপচেপড়ার চিত্র নেই। আবার প্রায় প্রতিটা কাউন্টারের টিকিট বিক্রয় প্রতিনিধিদের যাত্রী ডাকার চিত্রও দেখা গেছে।

এদিকে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নজরদারির চিত্রও দেখা গেছে। টার্মিনালের প্রবেশমুখে পুলিশ ও র্যাবের কন্ট্রোল রুম দেখা গেছে। সেই সঙ্গে গাবতলী সড়কের যানজট নিরসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতেও দেখা গেছে।

Advertisement

এছাড়াও টার্মিনালের মাইকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে অভিযোগের আহ্বান ও পরিবহন কাউন্টার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে নির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

সোনারতরী পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা মো.আভি বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ কিছুটা যাত্রীর চাপ আছে। গত কাল থেকে তুলনামূলক আজ যাত্রীর উপস্থিতি ভালো।

তিনি বলেন, বিগত ১২ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম যাত্রীর চাপ এত কম। সকাল থেকে আমাদের দুইটা গাড়ি ছেড়ে গেছে। দুই গাড়িতেই যাত্রী ফুল। সারা দিনে আমাদের আরও ৪টা গাড়ি ছাড়বে। অতিরিক্ত কোনো গাড়ি এখন পর্যন্ত আমরা ছাড়তে পারিনি।

জে লাইন পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মো. রাকিব বলেন, এবারের ঈদে মোটামুটি যাত্রীর চাপ দেখা যাচ্ছে। এই ঈদে আজই প্রথম সকাল বেলা মোটামুটি যাত্রীর চাপ দেখা যাচ্ছে। তবে কত সময় চাপ থাকবে সেটা বলা যায় না।

Advertisement

তিনি বলেন, সাধারণ দিনে এই সময়ের মধ্যে একটা টিপ থাকে। আজও সাধারণ সময়ের মতো একটি গাড়ি ছেড়ে গেছে। সব আসনেই যাত্রী ছিল। অতিরিক্ত কোনো গাড়ি এখন পর্যন্ত যায়নি। আমাদের সারাদিনে ৬টা গাড়ি ঢাকা ছেড়ে যাবে। সবগুলো গাড়ির ছিট বিক্রি হয়ে গেছে। যদি অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ হয় তখন আমরা ট্রিপের সংখ্যা বৃদ্ধি করবো।

ঈগল পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার সোহেল বলেন, যাত্রীর চাপ সেভাবে নেই। মোটামুটি যারা অ্যাডভান্সড টিকিট কেটেছে সেই যাত্রীগুলো নিয়ে গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা গাড়ির কাউন্টার থেকে যাত্রী ডাকাডাকি করছে। প্রতিটা গাড়িতেই আসন খালি থাকছে। সকাল থেকে একটি গাড়ি গাবতলী ছেড়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

জামান এন্টারপ্রাইজের টিকিট বিক্রেতা মীর জোনায়েদ রহমান বলেন, কালকের তুলনায় কিছুটা যাত্রীর চাপ দেখা যাচ্ছে। তবে সেভাবে যাত্রীর চাপ নেই। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত একটা গাড়ি ছাড়তে পেরেছি। তাও গাড়িতে ৫-১০টা আসন খালি রেখে ছেড়ে দিতে হয়েছে। সারাদিনে মোট ৬টা ট্রিপ আছে। যাত্রী না থাকায় আমরা কোনো অতিরিক্ত ট্রিপও দিতে পারছি না। যদি যাত্রীর চাপ বাড়ে তাহলে অতিরিক্ত ট্রিপ দেবো। আর যাত্রী না পেলে এই ৬টা গাড়িই যাবে।

রাজবাড়ী পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা সালাউদ্দিন বলেন, সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কিছুটা যাত্রীর চাপ আছে তবে কিছুক্ষণ পর কি হনে সেটা বলা যায় না।

তিনি বলেন, আমাদের গাড়ির সংখ্যা কম। সারা দিনে ৪-৫টা ট্রিপ যায়।

এদিকে নাটোরের যাত্রী মো.আমিনুল বলেন, এতটা ইজিলি এবার ঈদে বাড়ি যেতে পারবো সেটা ভাবিনি। যদিও আগে থেকে অগ্রিম টিকিট কেটে রেখেছিলাম কিন্তু কাউন্টারে এসে দেখছি অধিকাংশ গাড়িতেই যাত্রী ডাকছে সিট খালি আছে।

পাবনার যাত্রী মো. ইকবাল বলেন, টিকিট পেতেও কোনো সমস্যা হয়নি। কাউন্টারে এসেই টিকিট পেয়েছি।

টিকিট পেতে কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে কি না বা অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়েছে কি না ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, না টিকিট পেতে কোনো ভোগান্তি হয়নি। আবার টিকিটের দামও অতিরিক্ত নেয়নি। টিকিটের দাম অতিরিক্ত নিবে কীভাবে? সেই সুযোগ নেই। সব গাড়িতেই সিট আছে। কেউ বেশি টাকা চাইলে যাত্রী অন্য গাড়িতে টিকিট কাটছে। যে গাড়িতে ভাড়া কম পাচ্ছে। যদি গাড়িতে ছিট না থাকতো মানুষ বেশি থাকতো তাহলে বেশি নিলেও মানুষের বাধ্য হয়ে টিকিট কাটতে হতো।

চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আগামী ৩১ মার্চ সোমবার দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হতে পারে। সেই হিসাব করে সরকারি ছুটির তালিকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কেআর/এমআইএইচএস/এমএস