সৌদি আরবে থাকাকালীন বাংলাদেশি যুবক দেলোয়ার হোসেন প্রথম মাশরুম খান। এরপর দেশে ফিরে তার মনে খামার গড়ার স্বপ্ন জাগে। পরে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ শুরু করেন। নিজের শ্রম আর মেধায় তিনি এখন সফল। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জের বিনোদ ধর্মপুর গ্রামে তার খামারে মাশরুমের সমাহার।
Advertisement
দেলোয়ারের খামারে এখন ৩ জাতের মাশরুম আছে। এ পণ্য স্থানীয় বাজার ছাড়াও নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিক্রি হয়। কম পুঁজিতে বেশি লাভজনক এ পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে নিজের উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকার বেকার তরুণদের কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখছেন এ উদ্যোক্তা। তার দেখাদেখি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন স্থানীয় অনেকেই।
বাড়ির পাশে গড়ে তোলা দেলোয়ারের খামারে গিয়ে দেখা গেছে, এখানে কাঠ, খড়, গমের ভুষি, ক্যালসিয়াম চুন ও পানির মিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে মাশরুম তৈরির প্রথম ধাপ। পলিথিনে মোড়ানো প্যাকেটে গর্ত করে প্রধমে প্লাস্টিকের সাদা মুখ লাগিয়ে এসব ভর্তি করা হয়। পরে জীবাণুনাশক মেশিনে ২৪ ঘণ্টা রাখা হয়। এরপর এসি রুমে থাকা ল্যাবঘরে টেস্টটিউবে মাদার টিস্যু দিয়ে ২৮ দিন রাখা হয়।
আরও পড়ুন
Advertisement
পরে মূল খামারে সারিবদ্ধভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয় প্যাকেটগুলো। এতে পলিথিনগুলো ভেদ করে বেরিয়ে আসে ছোট-বড় মাশরুম। প্রতিদিন উৎপাদিত ২০-২৫ কেজি তুলে বাজারজাত করা হয়। প্রতি কেজি মাশরুম ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। আশেপাশের অনেকেই মাংস, স্যুপ ও সবজি হিসেবে কিনে খেতে পছন্দ করেন।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘১৩ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে হতাশায় ছিলাম। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মাশরুমের খামার করেছি। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সচেতনতা সৃষ্টি আর সঠিকভাবে বাজারজাত করতে পারলে মাশরুম রপ্তানিতেও সম্ভাবনা আছে। এতে ১০০ টাকা খরচে ৪০ টাকা আয় হয়।’
তিনি বলেন, ‘বিনা সুদে সহজ শর্তে ঋণ পেলে খামারের প্রসার করা যাবে। এ ছাড়া মাশরুমের পুষ্টিগুণ-উপকারিতা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি ভাবে প্রচারণা চালালে দেশে এর বড় বাজার সৃষ্টি হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান ইমাম বলেন, ‘মাশরুম ঘিরে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগ্রহীদের প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় সহযোগিতা দিতে আমরাও কাজ করছি।’
Advertisement
এসইউ/এমএস