পবিত্র রমজান মাসে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে ভয়াবহ আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শ করেই এই হামলা চালানো হয়েছে। হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র ফক্স নিউজকে বলেছেন, হামলা চালানোর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে ইসরায়েল পরামর্শ করেছে। খবর রয়টার্সের।
Advertisement
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গাজায় হামলার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন এবং হোয়াইট হাউজের সঙ্গে ইসরায়েলিরা পরামর্শ করেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা হামাস নিয়ন্ত্রিত বেশ কিছু অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। হামলায় গাজার উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হামাসের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাহমুদ আবু ওয়াফাহ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গাজায় এটাই সবচেয়ে বড় বিমান হামলা। যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর আলোচনা সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে।
Advertisement
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, পবিত্র রমজান মাস হওয়ায় অনেক লোক সেহরি খাচ্ছিলেন তখনই গাজায় বিস্ফোরণ শুরু হয়। ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত সেখানে তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে বহু নারী এবং শিশুও রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও অনেকেই।
২০ টিরও বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজা সিটি, রাফাহ ও খান ইউনিসের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে শুরু করে বলে তারা জানিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যে নিহতদের মধ্যে ৫০ জনেরও বেশি শিশু এবং ২৮ জন নারী রয়েছে বলে জানা গেছে। কর্মকর্তারা সব হাসপাতাল থেকে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজ মঙ্গলবার সকালে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
Advertisement
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের বারবার অস্বীকৃতি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ ও মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে আসা সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের জবাবে এই হামলা। ইসরায়েল এখন থেকে হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করবে।
গাজায় হামলার পরিকল্পনা আইডিএফ গত সপ্তাহের শেষে উপস্থাপন করেছিল এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব তা অনুমোদন করেছিল বলেও জানানো হয়।
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন হামাসকে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আমরা আমাদের শত্রুদের প্রতি কোনো দয়া দেখাব না।
এদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিলের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনে হামাস ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলছে, ইসরায়েল গাজায় বন্দি অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের ‘একটি অজানা ভাগ্যের’ দিকে ঠেলে দিলো।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিহত গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত বেড়ে তিন শতাধিক রমজানেও গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা, শিশুসহ নিহত ১০০তবে হামাস এখনও ঘোষণা করেনি যে, তারা যুদ্ধ পুনরায় শুরু করছে। এর পরিবর্তে তারা মধ্যস্থতাকারী এবং জাতিসংঘকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে।
টিটিএন