সুনামগঞ্জ জেলায় ছোট-বড় ১০৬টি নদী রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি ঢল, বন্যা ও পলি ভরাটে প্রায় সব নদীই কম-বেশি ভরাট হয়েছে। পলি ভরাটে প্রায় মৃত রূপ ধারণ করেছে পুরাতন সুরমা নদী। তবে নদী রক্ষায় এরইমধ্যে নানা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নদীমাতৃক বাংলাদেশে এক সময় যেসব খরস্রোতা নদীগুলো ছিল, এখন সেগুলো আর দেখা যায় না। পলিমাটি ও বালি পড়ে অনেক নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে নদীপথে নাব্যসঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম সুনামগঞ্জের পুরাতন সুরমা নদী। ৭২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই নদীটি সুনামগঞ্জ, শান্তিগঞ্জ, দিরাই ও শাল্লা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নেত্রকোনার ধনু নদীতে মিশেছে।
একসময় এই নদী দিয়ে কার্গো জাহাজ, লঞ্চ চলাচল করলেও বর্তমানে পলিমাটি ও বালি পড়ে ভরাট হওয়ায় ডিঙি নৌকা চলাচলও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তলদেশ ভরাট হওয়ায় স্থানীয়রা ধান চাষ, গবাধিপশু চরানোসহ খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করছেন।
আরও পড়ুন লবলং নদে দিনে ১ লাখ ৮০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে ‘কসম’ সংগ্রহে মানুষের হুড়োহুড়ি লোকালয়ে ধরা পড়েছে গড়াই নদীর কুমিরশুধু পুরাতন সুরমা নয়, একই অবস্থা জেলার ১০৬টি নদীর। বিশেষ করে সুনামগঞ্জের ১২০ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত জাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই ও পাটলাই নদীতে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে বালিমাটি ও পলি জমে নদী ভরাট হয়ে গেছে। ফলে ১৩৬ কিলোমিটার নৌপথজুড়ে দেখা দিয়েছে চরম নাব্য সংকট। এতে আটকা পড়ে আছে শতাধিক মালবাহী বাল্কহেড।
Advertisement
নদী তীরবর্তী বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, এক সময় জেলার এই নদীপথে জাহাজ, লঞ্চ ও বড় বড় নৌকা চলাচল করত। নদীতে মাছ ধরা যেত। পাশাপাশি নদী কেন্দ্রিক ব্যবসাও ছিল জমজমাট। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পলি ভরাটের ফলে নদীগুলো মৃত রূপ ধারণ করেছে।
আজাদ মিয়া বলেন, আমরা চাই সুনামগঞ্জের প্রতিটি নদী যেন দ্রুত খনন করা হয়। এতে নদীগুলো তাদের যৌবন ফিরে পাবে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, সুনামগঞ্জের প্রতিটি নদী রক্ষায় এরইমধ্যে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। দ্রুত এগুলো খননের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এসব নদী খননে দ্রুত উদ্যোগ নিলে একদিকে যেমন নদীগুলো তার পুরোনো যৌবন ফিরে পাবে, অন্যদিকে আবারো নৌপথ কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্য জমজমাট হবে। চাঙ্গা হবে জেলার অর্থনীতি।
Advertisement
এফএ/জিকেএস