কোনো মসজিদে এক বা একাধিক দিন দুনিয়াবি কাজকর্ম থেকে অবসর নিয়ে সওয়াবের নিয়তে অবস্থান করাকে ইতেকাফ বলে। ইতেকাফ ইসলামে ফজিলতপূর্ণ একটি আমল। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে নির্দেশ দিলাম, তোমরা আমার ঘরকে তওয়াফকারী, ইতেকাফকারী ও রুকু–সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখো। (সুরা বাকারা: ১২৫)
Advertisement
রমজানের শেষ দশ দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল ইতেকাফ। এই ইতেকাফ শরিয়তে সুন্নতে মুআক্কাদা কেফায়া। কোনো মহল্লা বা এলাকা থেকে একজন ইতেকাফ করলে পুরো মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে এটি আদায় হয়ে যাবে। কেউ ইতেকাফ না করলে সবাই গুনাহগার হবে। আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, নবিজি (সা.) প্রতি রমজানে দশ দিন ইতিকাফ করতেন। যে বছর তিনি ইন্তিকাল করেন, ওই বছর তিনি বিশ দিন ইতিকাফ করেছিলেন। (সহিহ বুখারি)
এ ছাড়া সারা বছরই নফল ইতেকাফ করা যায়। ইতেকাফের মানত করলে তা পূরণ করা ওয়াজিব। ওয়াজিব ইতেকাফে রোজা রাখা বাধ্যতামূলক।
ইতেকাফের জায়গা মূলত মসজিদ। তাই মসজিদে ইতেকাফের সুযোগ থাকা অবস্থায় আবাসিক ভবনের নামাজঘরে বা নিজের ঘরে ইতেকাফ শুদ্ধ হবে না। কোনো পুরুষ যদি ইতেকাফের মানত করেন, তাহলে তার জন্য কোনো মসজিদে ইতেকাফে বসে ওই মানত পূরণ করা ওয়াজিব হবে। রমজানের সুন্নত ইতেকাফ বা অন্য সময়ের নফল ইতেকাফও পুরুষদের মসজিদেই করতে হবে।
Advertisement
পুরুষদের মতো নারীরাও মসজিদে ইতেকাফ করতে পারেন যদি নারীদের ইতেকাফ করার জন্য নিরাপদ ও উপযোগী মসজিদ পাওয়া যায়। এ রকম মসজিদ না পাওয়া গেলে নারীরা ভবনের নামাজঘরে (যদি নিরাপদ ও উপযোগী হয়) বা নিজেদের ঘরের নির্দিষ্ট ইবাদতের কক্ষে ইতিকাফে বসবেন। ইবাদতের নির্দিষ্ট কক্ষ না থাকলে ইতিকাফের জন্য একটি কক্ষ নির্দিষ্ট করে ইতেকাফের নিয়ত করবেন। খাওয়া-দাওয়া ওই কক্ষেই করবেন এবং শরিয়ত সমর্থিত কারণ ছাড়া ওই কক্ষ ছেড়ে অন্যত্র যাবেন না। ইতেকাফের জন্য যথাসম্ভব ছোট কক্ষ নির্ধারণ করা উচিত যা শুধু তার থাকা ও ইবাদতের জন্যই ব্যবহৃত হবে। এ রকম কক্ষ না পাওয়া গেলে বড় ঘরের কিছু জায়গাও নির্দিষ্ট করেও ইতেকাফের নিয়ত করা যায়।
ওএফএফ/জেআইএম