মানিকগঞ্জে ইরি-বোরো চাষে খরচ বেড়েছে। ডিজেল, সার, বীজ, চারা, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
Advertisement
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪৮ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষ হয়েছে ৪৮ হাজার ৭৬৪ হেক্টর জমিতে। ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে চাষ হয়েছিল ৪৮ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে চাষ হয়েছিল ৪৮ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে। মানিকগঞ্জের সাত উপজেলায় ইরি-বোরো ধান চাষ করা হয়। এসব জমিতে ব্রি ধান -২৯, ব্রি ধান -৫৮, ব্রি ধান -৮৮, ব্রি ধান-৮৯, ব্রি ধান- ৯২ জাতের ধান চাষ করা হয়। নতুন করে পরীক্ষামূলক কিছু জমিতে ব্রি ধান-১০০ ও ব্রি ধান-১০২ চাষ করা হয়েছে। এ বছর খরচ বাড়ার কারণে এ জেলার কৃষকরা অন্য ফসল চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন।
এদিকে শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে। পাশাপাশি কীটনাশক, বীজ, সার ও ডিজেলের দাম বাড়ায় গত বছরের তুলনায় বিঘাপ্রতি দুই হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
নবগ্রাম এলাকার কৃষক সমেজ শিকদার বলেন, ১০ বছর ধরে ইরি ধানের চাষ করি। গত বছর চার বিঘা জমিতে চাষ করেছিলাম। আর এ বছর ৩ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। এ বছর খরচ একটু বেশি তাই একটু কমিয়ে দিয়েছি। নিজের কোনো জমি নাই অন্য লোকের জমি টাকা দিয়ে রেখে তারপর চাষাবাদ করতে হয়।
Advertisement
আটিগ্রাম এলাকার রাজিব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি আমার বাবাকে কৃষি কাজে সহযোগিতা করি। এ বছর আমরা কোনো ফসলে তেমন টাকা পাইনি তাই বেশি ধান চাষ করতে পারিনি। সার, ডিজেল ও শ্রমিকের দামটা বেশি। গত বছর যে চারা ৪০০ টাকায় পাওয়া গেছে সেই চরার দাম এ বছর ১০০০-১২০০ টাকা।
আরমান মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, আমি ৬ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। গত বছর ৪ বিঘা জমিতে চাষ করেছিলাম। তাতে সারা বছরের খাওয়ার ধান রেখে ভালো লাভ হয়েছিল। এ বছর প্রতি বিঘায় ২-৩ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, জেলায় ইরি-বোরো ধান চাষ একটু দেরিতে হয়। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ হাজার ৮৯৫ হেক্টর। তবে গত বছরের চাইতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষক এ বছর একটু কম ইরি-বোরো ধান চাষ করেছেন।
মো. সজল আলী/আরএইচ/এএসএম
Advertisement