দেশজুড়ে

জাহাজ থেকে প্রতিদিন হাজার লিটার তেল চুরি

তেলবাহী জাহাজ থেকে প্রতিদিন চুরি হচ্ছে হাজার লিটার ডিজেল, অকটেন। সেখান থেকে বিশেষ উপায়ে পাইপলাইনে ড্রামে ভরার পর ছোট নৌকায় রাতের বেলা এই তেল পৌঁছে যাচ্ছে কালোবাজারে। এই চুরির সঙ্গে জড়িত জাহাজের সারেং, তেল ডিপোর কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় শক্তিশালী সিন্ডিকেট। বাস্তবিকই সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী বড়াল নদী রাতের আঁধারে পরিণত হয় চোরাই তেলের বিশাল বাজারে।

Advertisement

প্রতি রাতে চুরির কারণে বছরে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে শত শত কোটি টাকা। সেই টাকায় ফুলেফেঁপে উঠছে একটি অপরাধী চক্র। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় এই লুটপাট চললেও বিগত দুই বছরে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

সরেজমিনে রাতের চিত্র

বড়াল নদীর ওপরে ব্রিজ পার হয়েই রামখেরুয়া সড়ক। মেঠোপথের এই সড়কটি উন্নয়নকাজের কারণে চলাচল অযোগ্য। কিন্তু তারপরেও এই সড়ক ঘিরেই চলে নানান অপকর্ম। অন্ধকারে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে গিয়ে নদীর সংযোগস্থলটি চরচিথুলিয়া গ্রাম। রাতে এলাকাটিতে স্তব্ধ নীরবতা। অস্পষ্ট আলোয় একটি তেলের জাহাজ ঘিরে কিছু ছোট নৌকা চোখে পড়লো। নৌকাগুলো ধীরে ধীরে তেলবাহী জাহাজের কাছে যায়। শ্রমিকরা দ্রুত কাজ করলেও তাদের মধ্যে কোনো তাড়াহুড়া নেই। অল্পদূরে অন্য একটি নৌকায় বসে এই দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে শ্রমিকদের এই কাজ একেবারে স্বাভাবিক। তারা জাহাজের তেল ভর্তি ট্যাংকার থেকে পাইপে দিয়ে তেল সরিয়ে নিতে সহযোগিতা করছে। আর নৌকায় থাকা সিন্ডিকেট সদস্যরা ভরা ড্রাম নৌকায় সাজানোর কাজ করছে।

আরও পড়ুন

Advertisement

দিনাজপুরে পাইপলাইন ফুটো করে তেল চুরি, গ্রেফতার ৪ অয়েল ট্যাংকার থেকে ১১ হাজার লিটার ভোজ্যতেল চুরি, গ্রেফতার ১২

অনুসন্ধান কাজে ব্যবহৃত নৌকার মাঝি জানান, এই কাজ সব রাতেই হয়। আমরা জানলেও কাউকে বলার মতো সাহস করি না। কারণ যারা এসব কাজে জড়িত তারা খুবই প্রভাবশালী। টের পেলে জানে মেরে ফেলবে। থানা পুলিশের সাথে তাদের দহরম-মহরম। চক্রের সাথে স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরাও জড়িত। বিষয়টি পুরো এলাকা জানে। তারা চোরাই তেল প্রতিদিন কালোবাজারে বিক্রি করে।

প্রতিদিন গড়ে বিভিন্ন জাহাজ ও ট্যাংকার থেকে ৫০ থেকে ৭০ হাজার লিটার তেল চুরি হয়। মাসে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫-২০ লাখ লিটার। বছরে ২ থেকে আড়াই কোটি লিটার। লিটারপ্রতি ২ টাকা করে লাভ হলেও চোরাই এই তেলের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রতিদিন ২ কোটি টাকা। মাসে ৬০ কোটি এবং বছরে টাকার অঙ্কে মূল্য দাঁড়ায় ৭০০ কোটি টাকার ওপরে।

 

নদীর মধ্যে যখন এসব কাজ চলছিল, তখন চক্রের কিছু সদস্য অন্যদের আলোর সংকেত দিচ্ছিল। এলোমেলো আলোর এই নাচন তারা ছাড়া অন্যদের বোঝার উপায় নেই। ভোরের আলোয় দেখা গেলো ডিপোর অদূরে তেল খালাস করার অপেক্ষায় এম.টি ইস্ট বেঙ্গল, মেসার্স আব্দুল করিম শিপিং লাইন্স, ও.টি এবাদত, অয়েল কিংফিসার, ও.আই প্রিসিয়াস, ও.টি রাওফিসহ ১৫টির অধিক জাহাজ বড়াল নদীতে নোঙর করা।

ছোট ছোট নৌকায় ড্রামে করে নেওয়া হয় তেল-ছবি জাগো নিউজ

Advertisement

সিন্ডিকেট যাদের হাতে

বাঘাবাড়ী ঘাটে নদীতে জাহাজ থেকে তেল চুরি সিন্ডিকেট প্রধান ল্যাংড়া স্বপন। তার সঙ্গী হলেন শাকতোলা গ্রামের ফারুক হোসেন, ওমর হাজী এবং বড়বায়রা গ্রামের মোতালেব হোসেন। এরা প্রত্যেকেই আগে ঘাটকেন্দ্রিক কুলি সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করতেন। এখন সব ছেড়ে তেল চুরির সিন্ডিকেট সামলান।

অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, বাঘাবাড়ী ঘাটের আশেপাশের ১০টি গ্রামের আরও ৪০ জনের একটি চক্র এই সিন্ডিকেটের সদস্য। এদের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছেন নুকালি গ্রামের সম্রাট শাহজাহান ও মন্টু মিয়া, আলোকদিয়ার জহুরুল সরকার, আব্দুল কাদের, রফিকুল ইসলাম, আলম মিয়া, শামীম হোসেন এবং শাক তোলার সাদেক হোসেন। রাতের অন্ধকারে এরাই জাহাজ থেকে তেল নামানোর মূল দায়িত্ব পালন করেন। এই চক্রের অন্য সদস্যরা আশপাশের একমাইল এলাকাজুড়ে আলোর সংকেত দিয়ে টহল দেয়। তবে স্থানীয় থানা পুলিশ ও পোর্ট কর্মকর্তাদের সাথে গোপন যোগাযোগ থাকার কারণে কখনো কেউই তাদের কাজে বাধা দেয় না। সরেজমিনে পরিদর্শনকালেও সেখানে কোনো পুলিশি টহল চোখে পড়েনি। এ ব্যাপারে জানতে ল্যাংড়া স্বপনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন

তেল চুরি করতে গিয়ে বিস্ফোরণ, নিহত বেড়ে ৭৩ নাটোরে রেলের তেলচুরি চক্রের ৫ জন আটক

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ীতে বড়াল নদীর তীরে ১৯৮৩ সালে ৪৭ একর জায়গার ওপর নির্মিত হয় এ বন্দর। রয়েছে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা কোম্পানির তেলের ডিপো। এখান থেকে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়। এছাড়া নদীপথে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার জন্য সার, কয়লা, সিমেন্ট, চাল, গম, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের ৯০ শতাংশ আনা হয় এই বন্দর দিয়েই। দ্বিতীয় শ্রেণির বন্দর হওয়ায় প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে নাব্য সংকট দেখা দেয়। এতে পণ্য নিয়ে বড় জাহাজগুলো বন্দরে ভিড়তে পারে না। বাঘাবাড়ী থেকে প্রায় ৪৫ মাইল দূরে মানিকগঞ্জের বাহাদুরাবাদে যমুনা নদীতে জাহাজগুলোকে অবস্থান করতে হয়। সেখান থেকে ছোট ছোট লাইটার জাহাজে মালামাল আসে।

এখান থেকে উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়। এছাড়া নদীপথে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার জন্য সার, কয়লা, সিমেন্ট, চাল, গম, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের ৯০ শতাংশ আনা হয় এই বন্দর দিয়েই। দ্বিতীয় শ্রেণির বন্দর হওয়ায় প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে নাব্য সংকট দেখা দেয়। এতে পণ্য নিয়ে বড় জাহাজগুলো বন্দরে ভিড়তে পারে না। বাঘাবাড়ী থেকে প্রায় ৪৫ মাইল দূরে মানিকগঞ্জের বাহাদুরাবাদে যমুনা নদীতে জাহাজগুলোকে অবস্থান করতে হয়। সেখান থেকে ছোট ছোট লাইটার জাহাজে মালামাল আসে।

  চোরাই তেল কোথায় কীভাবে বিক্রি

অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, বাঘাবাড়ী ডিপোতে আসা জাহাজ থেকে চুরি হওয়া তেল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কালোবাজারে ছড়িয়ে পড়ে। এই কাজটি করা হয় কয়েকটি ধাপে। তেল চুরির পর নদীপথে অন্যত্র পাঠানো ছাড়াও স্থানীয় সিন্ডিকেট পরিচালিত গুদাম ও ডিপোগুলোতে মজুত করা হয়। এসব গুদামে একসঙ্গে হাজার হাজার লিটার তেল মজুত রাখা যায়। পরে সেগুলো পাইকারি দামে বিক্রি করা হয়। বোরো মৌসুমে ডিজেলের চাহিদা থাকে বেশি। এজন্য এসময় তেল বেশি চুরি হয়। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রতি লিটারে ১০-১৫ শতাংশ কম দামে বিক্রি করা হয় চোরাই তেল।

অধিকাংশ ট্যাংকলরি থেকে চুরি হয় তেল-ছবি জাগো নিউজ

চক্রের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতিদিন গড়ে বিভিন্ন জাহাজ ও ট্যাংকার থেকে ৫০ থেকে ৭০ হাজার লিটার তেল চুরি হয়। মাসে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫-২০ লাখ লিটার। বছরে ২ থেকে আড়াই কোটি লিটার। লিটারপ্রতি ২ টাকা করে লাভ হলেও চোরাই এই তেলের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রতিদিন ২ কোটি টাকা। মাসে ৬০ কোটি এবং বছরে টাকার অঙ্কে মূল্য দাঁড়ায় ৭০০ কোটি টাকার ওপরে।

আরও পড়ুন

মাঝ পদ্মায় জাহাজ থেকে তেল চুরি, গ্রেফতার ১২ ফেনীতে ট্রেন থেকে প্রতিদিন চুরি হচ্ছে ৩২০০ লিটার তেল

চুরি হওয়া তেল কালোবাজারে ১০-১৫ শতাংশ কম দামে বিক্রি হয়। ভেজাল থাকলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দাম ২০ শতাংশও কম রাখা হয়। এই তেল সাধারণত কৃষি এবং পরিবহনখাতে বেশি ব্যবহৃত হয়।

বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৬ লাখ লিটার জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়। তবে নাব্য সংকট থাকলে জাহাজগুলো পূর্ণ ধারণক্ষমতায় তেল পরিবহন করতে পারে না। ফলে প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ লিটার তেল ডিপোতে পৌঁছায়।

ঘাটতি তেলের নয়-ছয় হিসাব

বেশিরভাগ জাহাজে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার তেল চোরাই সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি হয়। এই তেল ঘাটতি পূরণ করতে নেওয়া হয় অভিনব পন্থা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাঘাবাড়ী ডিপোর একজন কর্মচারী জানান, চুরি হওয়া তেলের হিসাব গোপন রাখতে জাহাজের সারেং ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা একাধিক কৌশল অবলম্বন করেন। এতে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশন) ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এই চক্রের সাথে ডিপোর অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। তারাও নির্দিষ্ট অঙ্কের কমিশন পান।

রাতের অন্ধকারে এরাই জাহাজ থেকে তেল নামানোর মূল দায়িত্ব পালন করে। এই চক্রের অন্য সদস্যরা আশপাশের একমাইল এলাকাজুড়ে আলোর সংকেত দিয়ে টহল দেয়। তবে স্থানীয় থানা পুলিশ ও পোর্ট কর্মকর্তাদের সাথে গোপন যোগাযোগ থাকার কারণে কখনো কেউই তাদের কাজে বাধা দেয় না। সরেজমিনে পরিদর্শনকালেও সেখানে কোনো পুলিশি টহল চোখে পড়েনি।

ঘাটতি পূরণের একটি উপায় হলো ম্যানিফেস্ট কারচুপি। এর মাধ্যমে কাগজে বেশি, বাস্তবে কম তেল বুঝে নেওয়া হয়। প্রতিটি জাহাজে যে পরিমাণ তেল আনা হয়, তার হিসাব একটি নথিতে (ম্যানিফেস্ট) উল্লেখ থাকে। তবে এই নথিতে ইচ্ছাকৃতভাবে তেলের পরিমাণ কমিয়ে নেয় তারা। ফলে তেল চুরি হলেও কাগজপত্রে সব ঠিকঠাক দেখানো যায়।

এছাড়া অন্য পদ্ধতিতে তেলের পরিমাণ মাপার জন্য নির্দিষ্ট গেজ বা মিটার ব্যবহার করা হয়। সারেং ও ক্রুরা আগেই গেজের রিডিং কারসাজি করে রাখেন। যাতে ডিপোতে পৌঁছানোর সময় হিসাব ঠিক থাকে। এতে কাগজে দেখানো পরিমাণ ও বাস্তব তেলের পরিমাণের মধ্যে পার্থক্য ধরা পড়ে না। আবার কখনো কখনো তেল চুরির ঘাটতি মেটানোর জন্য ট্যাংকের নিচের অংশে পানি মিশিয়ে দেওয়া হয়। ফলে তেলের পরিমাণ বেশি দেখানো সম্ভব হয়। বিশেষ করে গভীর রাতে তেল খালাসের সময় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুন

সীতাকুণ্ডে এত চোরাই তেল আসে যেভাবে! এস আলমের আমদানি করা সয়াবিন তেল চুরি, চারজন গ্রেফতার

নিয়ম অনুসারে জাহাজ থেকে তেল খালাসের পর ডিপোর কর্মকর্তাদের তেল পরিমাপ করার কথা। কিন্তু অনেক সময় তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য লিপিবদ্ধ করেন বা গেজের রিডিং সঠিকভাবে পরীক্ষা করেন না। কিছু অসাধু কর্মকর্তা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে চুরি হওয়া তেলের হিসাব গোপন রাখতে সাহায্য করেন।

দিনে ট্যাংকলরি থেকে তেল চুরি

নদীতে জাহাজ ছাড়াও বাঘাবাড়ী ডিপোর আশপাশে ট্যাংকার থেকে তেল চুরির বিষয়টি একেবারেই ওপেন সিক্রেট। তেল নিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার পথে ড্রাইভার হেলপাররা দিনে রাতে সবসময়ই ট্যাংকার থেকে তেল নামিয়ে বিক্রি করেন। চোরাই তেলের ক্রেতা সেখানে গড়ে ওঠা অবৈধ চোরাই তেলের দোকান মালিকরা। এ ধরনের দোকান ডিপোর আশেপাশে ৫ শতাধিক রয়েছে। তেলের দোকান ছাড়াও বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে সিরাজগঞ্জ রোড পর্যন্ত ১৪টি স্থানে আসল তেল বদল করে ভেজাল তেল নেওয়ার মিনি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ থেকে ৭০০ লিটার পর্যন্ত তেল বদলের সুযোগ রয়েছে।

আব্দুল কাদের নামের একজন তেল ব্যবসায়ী বলেন, ডিপো থেকে প্রতিদিন সাড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ ট্যাংক লরি জ্বালানি তেল বহন করে। এর মধ্যে শুধু ডিজেল বহনকারী ট্যাংক লরির সংখ্যা প্রায় ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ । বাকিগুলো পেট্রল, অকটেন ও কেরোসিন বহন করে। অধিকাংশ ট্যাংকলরি থেকে ড্রাইভার ও হেলপাররা ২২০ লিটার থেকে ৪৪০ লিটার পর্যন্ত তেল চুরি করে পথে বিক্রি করেন।

যা বলছে কর্তৃপক্ষ

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম আলীর কাছে বিগত দুই বছরে চোরাই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযানের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো তথ্য দিতে পারেননি। একই সাথে সেখানে তেল চুরির অবৈধ কার্যক্রম চলে বলে কোনো অভিযোগ তার কাছে নেই বলে জানান।

চোরকারবারিদের সাথে পুলিশের সম্পর্কের বিষয়টি নাকচ করে তিনি বলেন, কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা প্রস্তুত।

এ বিষয়ে বাঘাবাড়ী তেল ডিপোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম সাদেকীনের সাথে মোবাইলে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এসএমএস করলেও তিনি সাড়া দেননি।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। উপজেলা প্রশাসনের এখানে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। বিষয়টি দেখভাল করার দায়িত্ব পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের। তারা অভিযানকালে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে আমরা করি। তবে এক বছরে এ ধরনের কোনো অভিযান হয়নি বলে জানান তিনি।

এলবি/এসএইচএস/এমএস