খেলাধুলা

খেলা ছেড়ে দেয়া মুশফিকের জন্য কতটা কষ্টের তা অনুভব করছি: তামিম

দীর্ঘ ১৯ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানলেন মুশফিকুর রহিম। বুধবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ওডিআই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। মুশফিকের অবসর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই নিজের ভ্যারিফায়েড পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তামিম ইকবাল। সেখানে অত্যন্ত আবেগঘণ ভাষায় মুশফিককে নিয়ে বেশ কিছু কথা বলেছেন। যে কথাগুলোর পরতে পরতে জড়িয়ে আছে আবেগ আর ভালবাসা ও প্রশংসা।

Advertisement

সবারই জানা, বাংলাদেশ ক্রিকেটে দু’জন সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু হলেন তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম। অনূর্ধ্ব-১৫ লেভেল থেকে দু’জন একসঙ্গে খেলে আসছিলেন। যে কারণে অন্য সবার চেয়ে তামিমের কাছে মুশফিকের অবস্থান আলাদা।

নরমাল স্ট্যাটাস না দিয়ে তামিম কেন ভিডিও পোস্ট করলেন, শুরুতেই তিনি তা খোলাসা করলেন। তামিম বলেন, ‘আজকের আসলে এমনই একটি দিন, নরম্যালি কেউ যদি ফরম্যাট থেকে রিটায়ার ঘোষণা করে, সবাই স্ট্যাটাস দেয়, তাদের ফিলিংসটা বোঝায়। বাট এমন একজন ব্যক্তি আজকে (বুধবার) রিটায়ার করলো, যার সাথে আমার প্রায় অলমোস্ট ২০ বছর, ২৫ বছরের একটা জার্নি। তো একটা স্ট্যটাসে মানুষকে আসলে বোঝাতে পারতাম না যে, আমার ফিলিংসটা তার প্রতি কি বা আমার এখন কেমন মনে হচ্ছে।’

মুশফিককে নিয়ে এরপর তামিম বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন যে, মুশফিক কিছুক্ষণ আগেই ওডিআইট ফরম্যাট থেকে রিটায়ার করেছে। মুশফিককে আমি এতটুকুই বলতে চাই যে দোস্ত, তোর সাথে আমার খেলা শুরু অনূর্ধ্ব-১৫ লেভেল থেকে। আমি তোকে স্টেপ বাই স্টেপ বেড়ে উঠতে দেখেছি। আমি তোকে দেখছি যে, তুই একটা নরম্যাল ব্যাটসম্যান থেকে বাংলাদেশের ওয়ান অব দ্য বেস্ট ব্যাটসম্যান কেমনে হইছস।’

Advertisement

মুশফিকের কঠোর পরিশ্রম নিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘অনেক মানুষ হয়তো বা আপানাদের ওর হার্ডওয়ার্কটা দেখার সুযোগ হয়নি। যেহেতু আমরা যারা ওর সাথে খেলি, আমি দেখছি যে একটা ছেলে কতটা কষ্ট করতে পারে! একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব, আমার মনে হয় সে সবই করেছে। এখনও করে যায়। আমরা এটা নিয়ে অনেক সময় হাসাহাসিও করে যাই যে, একটা মানুষ এতটা কষ্ট করে কেমনে।’

খেলা ছেড়ে দেয়া মুশফিকের জন্য খুবেই কষ্টের। এ বিষয়টা তুলে ধরে তামিম বলেন, ‘তবে তার ডেডিকেশন, তার খেলার প্রতি ভালোবাসা- এটা অসাধারণ। যা আমি কথায় কখনো কাউকে বোঝাতে পারবো না। আজকে খেলা ছেড়ে দেওয়া, এটা ওর জন্য যে কতটা কষ্টকর, আমি যেহেতু ওর খুব কাছের একজন ফ্রেন্ড, আমি এ জিনিসটা ফিল করতে পারি যে, এটা তার জন্য খুব.. খুব বেশি কঠিন।’ ‘তবে আমার বন্ধু, তুই যাই অর্জন করিস না কেন, এটা সারাজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তুই একজন অধিনায়ক, একজন খেলোয়াড় হিসেবে বাংলাদেশের জন্য যাই করেছিস, তা অবশ্যই বছরের পর বছর স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

ওয়ানডে থেকে অবসর নিলেও টেস্ট খেলে যাবেন মুশফিক। এখনও ৯৪ টেস্ট খেলেছেন তিনি। তামিম ইকবাল প্রত্যাশা করেন, মুশফিক শততম টেস্ট খেলবেন। তিনি বলেন, ‘এখনও তুই একটা ফরম্যাট খেলবি, টেস্ট ফরম্যাট। আমি সত্যিই আশা করবো এবং দোয়া করবো, তুই যেন ভালো করতে পারিস। তুই অন্তত যেন ১০০তম টেস্ট খেলতে পারিস। যেটা এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার খেলেনি, আমি এটা আশা করবো যে, তুই ১০০তম টেস্ট অবশ্যই খেলবি। এটাই।’

শেষ মুহুর্তে অনেক আবেগি হয়ে গিয়েছিলেন তামিম। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, এই মুহূর্তে আমি খুব ইমোশনাল হয়ে পড়েছি। তুই যা অনুভব করছিস, সেটা আমিও অনুভব করতে পারছি। এটা নিশ্চিত যে, অবশ্যই বাংলাদেশ তোকে মিস করবে। দেশের জন্য তুই যা করেছিস, তা অনেক বছর ধরে সবাই স্মরণ করবে। আমি সৌভাগ্যবান যে, বিপিএলে তোর সাথে খেলতে পারছি। তোর সাথে অনেক সময় পেয়েছি শেয়ার করার জন্য। সামনে আরও পাবো। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।’

Advertisement

আইএইচএস/