রমজান মাসে দিনের বেলা মশার কয়েল, ধূপ, আগরবাতি ইত্যাদি জ্বালানো জায়েজ। এতে রোজার ক্ষতি হবে না। কারণ ধূপ, কয়েল, আগরবাতি ইত্যাদি জ্বালালে আশপাশে ঘ্রাণ ছড়ায় বটে, কিন্তু এর ধোঁয়া নাক পর্যন্ত পৌঁছে না। আর অনিচ্ছাকৃত কিছু ধোঁয়া নাকে-মুখে চলে গেলেও রোজা নষ্ট হবে না। তবে রোজা অবস্থায় কেউ যদি ইচ্ছাকৃত নাক বা মুখ দিয়ে এগুলোর ধোঁয়া টেনে নেয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।
Advertisement
উল্লেখ্য, রোজা অবস্থায় পানাহারের মতো ধুমপানও নিষিদ্ধ। সুবহে সাদিকের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত সামান্য পরিমাণ ধুমপান করলেও রোজা ভেঙ্গে যায়। কেউ যদি রমজানের রোজা রেখে স্বেচ্ছায় ধুমপান করে, তাহলে তার ওপর কাজা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করা আবশ্যক হয়।
কাজা অর্থ একটি রোজার বদলে পরবর্তীতে আরেকটি রোজা রাখা আর কাফফারা আদায় করার তিনটি পদ্ধতি রয়েছে ১. একটি দাস মুক্ত করা, ২. ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা ভালোভাবে তৃপ্তিসহকারে আহার করানো ৩. ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজা রাখা।
যে সব কারণে রোজা ভেঙে যায়১. কেউ যদি ইচ্ছা করে রমজান মাসের দিনের বেলা যৌনমিলন করে অথবা পানাহার করে, তবে তার রোজা ভেঙে যাবে। কাজা করতে হবে, কাফফারাও দিতে হবে।
Advertisement
২. মেয়েদের মাসিক ও সন্তান প্রসবের পরবর্তী ঋতুস্রাবের সময় রোজা রাখা নিষিদ্ধ। রোজাদার অবস্থায় মাসিক শুরু হলে অথবা সন্তানের জন্ম হলে রোজা ভেঙে যাবে। পরবর্তী সময়ে এই রোজা কাজা করে নিতে হবে।
৩. ইচ্ছা করে বমি করলে রোজা ভেঙে যাবে, বমি মুখে চলে আসর পর ইচ্ছাকৃত তা গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে, শুধু কাজা করতে হবে।
৪. রমজান মাসের দিনের বেলা ইসলাম ত্যাগ করলে বা মুরতাদ হয়ে গেলে তার রোজা ভেঙে যাবে। ইসলামে আবার ফিরে আসলে ওই রোজাটি কাজা করে নিতে হবে।
৫. কুলি করার সময় অনিচ্ছায় গলার ভেতর পানি প্রবেশ করলে, রাত অবশিষ্ট আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর পানাহার করলে, ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে, রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় অজুতে কুলি বা নাকে পানি দেওয়ার সময় ভেতরে পানি চলে গেলে রোজা ভেঙে যাবে, কাজা করে নিতে হবে।
Advertisement
৬. রোজা থাকার কথা ভুলে গিয়ে কোনো কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভাঙবে না। তবে ভুলবশত খাওয়ার পর রোজা ভেঙে গেছে ভেবে ইচ্ছা করে আরো কিছু খেলে রোজা ভেঙে যাবে।
৬. জিহ্বা দিয়ে দাঁতের ফাঁক থেকে একটি ছোলার সমান বা এর চেয়ে বড় কোনো কিছু বের করে খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে, পরে কাজা করে নিতে হবে।
৭. প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ বা অন্য কিছু শরীরে প্রবেশ করালে, কান বা নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে রোজা ভেঙে যাবে, পরবর্তীতে কাজা করে নিতে হবে।
ওএফএফ/এএসএম