অর্থনীতি

রমজানের বাজারে অস্বস্তি ফলে

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। রোজা শেষে ইফতারে ফলের জুড়ি নেই। বিশেষ করে খেজুরের সঙ্গে আপেল, কমলা, মাল্টাসহ অন্যান্য ফলের কদরও বাড়ে। তবে এবার এসব ফলের দাম হাতের নাগালের বাইরে।

Advertisement

পবিত্র এই রমজান মাস উপলক্ষে বেড়ে যায় ফল কেনাবেচা। তবে চড়া দামে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে। দাম বেড়েছে তরমুজ, আনারস, পেঁপে, পেয়ারা, কলার।

অন্যদিকে, ইফতারের শরবতের অন্যতম উপকরণ লেবুর সর্বনিম্ন পিস এখন ১০ টাকা। আকারভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম চাওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এসব চিত্র।

Advertisement

এদিন রাজধানীল বাজারে প্রতিকেজি আপেল বিক্রি হয় ৩২০ টাকা কেজি দরে, গ্রিন আপেল ৪২০ টাকা, মাল্টা ৩০০ টাকা, কমলা ২৮০ টাকা, চায়না (মোটা) কমলা ৩২০ টাকা, আঙুর (কালো) ৪২০ টাকা, আঙুর (সবুজ) ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

এক সপ্তাহ আগেও সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হতো ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়। খুচরা দোকানে দাম হাঁকা হচ্ছে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। আজুয়া, মরিয়ম, মেডজুল, মাব্রুম খেজুরের জন্য গুণতে হচ্ছে ১০০০ থেকে ১৪০০ টাকা।

আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের রমজানের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি সৌদি আরবে রোজা শুরু শনিবার

ভরা মৌসুম না হলেও বাজারে এরই মধ্যে উঠেছে তরমুজ। প্রায় প্রতিটি দোকানেই থরে থরে সাজানো রসালো ফলটি। তবে দাম সাধারণের নাগালের বাইরে। প্রতিকেজি তরমুজের দাম চাওয়া হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা। তবে খুবই ছোট সাইজের তরমুজ মিলছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। প্রতি এক পিস আনারস পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে।

দাম বেড়ে প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহ আগেও যেটা ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। প্রতি ডজন পাকা কলার দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে কলার জাত ও আকারভেদে প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা থেকে ১২০ টাকা।

Advertisement

প্রতি পিস ডাবে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে দাম। বর্তমানে এক পিস ছোট আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছ ১০০ টাকায়। আর ডাবের আকার যত বেশি হবে দামও তত বেশি দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বড় আকারের এক পিস ডাব কিনতে গুণতে হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা।

সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শরবতের অন্যতম উপকরণ লেবুর দাম। বাজারে সর্বনিম্ন পিস এখন ১০ টাকা। ছোট আকারের লেবু এক হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, একটু বড় ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা হালিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। অথচ লেবুর হালি সপ্তাহখানেক আগেও বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকায়।

আয়েশা নামে এক ক্রেতা জাগো নিউজকে বলেন, রমজান মাস এলেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পণ্যের দাম কমানোের প্রতিযোগিতা হয়। আমাদের এখানে দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। কলা গত সপ্তাহে কিনলাম ৬০ টাকা ডজন, আজ সেই চিনি চম্পা কলার দাম চাওয়া হচ্ছে ৮০ টাকা। লেবুর হালিতে ৩০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। আপেল ও খেজুরের দাম ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে।

এ বিষয়ে মগবাজারের ফল বিক্রেতা আব্দুল হালিম জাগো নিউজকে বলেন, বাদামতলীর পাইকারি বাজারে ফল কিনতে গেলে দাম দেখে আমারই কষ্ট হচ্ছে, এতো দাম কীভাবে হয়। সেখানে দাম বাড়লে আমাদের কিছু করার থাকে না।

শফিউল্লাহ নামে অপর এক ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে বলেন, খেজুরে বর্তমানে কর দিতে হয় ৩৮.৭০ শতাংশ, আগে যেটা ছিল ৬৩.৬ শতাংশ। ফলে শুল্ক এবং কর কমানো হলেও মানুষ তার সুফল পাচ্ছে না। পাইকারে হয়তো পুরোনো সিন্ডিকেট আবার সক্রিয় হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।

ইএআর/এসএনআর/এএসএম