টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে শিক্ষা সফরের ৩টি বাসে ডাকাতির ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতভর ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়কে লক্ষণের বাধা এলাকায় পাহারা দিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসী। এসময় পুলিশ তাদের সহযোগিতা করে। প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।
Advertisement
স্থানীয়রা জানান, ওই স্থানের আশপাশে যে গ্রাম রয়েছে সেই গ্রামগুলোর মানুষ নিজেরাই বসে কোন গ্রাম কোনদিন পাহারার দায়িত্ব পালন করবে তা বণ্টন করে নিয়েছেন। ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল কামালপুর থেকে মালিরচালা ব্রিজপাড় পর্যন্ত সড়কের আধা কিলোমিটার এলাকায় হাতে লাঠি নিয়ে পাহারা দেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাগরদীঘি ও লক্ষিন্দর ইউনিয়নে রয়েছে বেশ কিছু সিপি কোম্পানির মতো বড় বড় কোম্পানি। এসব কোম্পানির গাড়ি রাতে এই সড়ক বেশি ব্যবহার করে থাকে। আর ডাকাতদের টার্গেট কোম্পানির এই গাড়িগুলো।
কামালপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, আগে রাত জেগে পাহারা দিতাম। এক বছর ধরে বাদ দিয়েছি। সারারাত জাগার পর দিনে কাজ করতে পারি না। এখন আবার শুরু করেছি।
Advertisement
মালিরচালা এলাকার বাসিন্দা হায়দার আলী সিকদার বলেন, আমরা গ্রামবাসী রাতভর পাহারা দিচ্ছি। আতঙ্কের মধ্যে কাটছে সময়। পুলিশের সঙ্গে একেকদিন ২০ জনের দল কাজ করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সালাম লিটন ভূঁইয়া বলেন, ডাকাতির ফলে পুরো এলাকার মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। সজাগ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। পুলিশের আরও সহায়তা প্রয়োজন।
মালিরচালা গ্রামের আব্দুস সালাম ভূইয়া লিটন বলেন, এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে লক্ষণের বাধা স্থানে পুলিশ চেকপোস্টের দাবি করে আসছে। কিন্তু কাজে আসছে না। চেকপোস্ট বসানো হলে হয়ত বন্ধ হবে ডাকাতির ঘটনা।
এ ব্যাপারে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, পুলিশের সহযোগিতায় গ্রামবাসী সড়কে পাহাড়া দিয়েছেন। এসময় সেনাবাহিনীর টিমও উপস্থিত ছিল। এর আগে গ্রামবাসীদের নিয়ে এলাকায় মিটিং করা হয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না।
Advertisement
মঙ্গলবার ভোর পৌনে ৪টার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষা সফরের জন্য চারটি বাস নিয়ে নাটোরের গ্রিনভ্যালি পার্কের উদ্দেশ্য রওনা দেন। চারটার দিকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের লক্ষণের বাধা এলাকায় পৌঁছালে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে বাস থামায় একদল ডাকাত। পরে ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ৩টি বাসে থাকা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে। পরে বাসের যাত্রী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ার আগেই ডাকাত দল পালিয়ে যায়।
ডাকাতরা নগদ দেড় লাখ টাকা, এক ভরি স্বর্ণ, ১০টি স্মার্টফোন লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মারধরের শিকার হয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সাখাওয়াত হোসাইন রবিন ও অভিভাবক শহিদুল্লাহ তালুকদার। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে ঘাটাইল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এফএ/এএসএম