দেশজুড়ে

মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেলেন তিন ভাই, পরিবারে খুশির বন্যা

পাবনার ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে গুলিবর্ষণ মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন আপন তিন ভাই। সাড়ে ৫ বছর পর তিন ভাই খালাসের পর বাড়ি ফিরে এসেছেন। এতে আনন্দ-উৎসবে মেতেছেন পরিবারের সবাই। মঙ্গল ও বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আপন তিন ভাইসহ মুক্ত সকল নেতাকে গণসংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

Advertisement

মুক্তি পাওয়া তিন ভাই হলেন, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু, সাবেক ছাত্রদল নেতা মাহবুবুর রহমান পলাশ ও ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি রেজাউল করিম শাহীন। এই মামলায় আপন তিন ভাইসহ মোট ৯ জনের ফাঁসির রায় হয়েছিল। এছাড়াও এ মামলায় ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ১৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ৩ জুলাই পাবনার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. রুস্তম আলী এই রায় ঘোষণা করেন।

মামলার ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সব আসামিদের খালাসের জন্য বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলাম ও বিচারপতি হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানির পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ ৪৭ জনের খালাসের রায় ঘোষণা করেন আদালত। এ রায়ে খালাস পান আপন তিন ভাইসহ এ মামলার সব আসামি।

খালাসের রায় ঘোষণার ৬ দিন পর মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আপন তিন ভাইয়ের মধ্যে মকলেছুর রহমান বাবলু রাজশাহী কারাগার ও রেজাউল করিম শাহীন পাবনা কারাগার থেকে মুক্ত হন। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্ত হন মাহাবুবুর রহমান পলাশ। তিনি কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে নিজ বাড়িতে ফেরেন বুধবার রাত সাড়ে ১০টায়।

Advertisement

কারামুক্ত মাহাবুবুর রহমান পলাশের মেয়ে তাসনিম মাহবুব প্রাপ্তি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, মনে হয় পৃথিবীর ইতিহাসেই বিরল মিথ্যা মামলায় একই পরিবারের একইসঙ্গে আপন তিন ভাইয়ের ফাঁসির রায়। আল্লাহর রহমতে আমার আব্বু আজ মুক্তি পাচ্ছেন। দুই চাচা গতকাল মুক্তি পেয়েছেন।’

মকলেছুর রহমান বাবলুর ছেলে মেহেদি হাসান শরৎ বাবার সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমার বাবা সাবেক সফল মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু দীর্ঘ কারাবাসের পর আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।’

জানা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তরাঞ্চলে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে ট্রেনে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ঢোকার সময় ট্রেনবহরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় ট্রেনে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলার অভিযোগে ঈশ্বরদী জিআরপি (রেলওয়ে পুলিশ) থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।

শেখ মহসীন/এফএ/এএসএম

Advertisement