কৃষিনির্ভর উত্তরের জনপদ গাইবান্ধা। সারাবছর এ জনপদের উর্বর মাটিতে বিভিন্ন ফসল চাষ হয়। এবার কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে কৃষক দম্পতির। ধানসহ প্রচলিত অন্য আবাদের পরিবর্তে তারা জেলায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছেন ভিনদেশি সবজি বিটরুট।
Advertisement
বিটরুটের গাছ দেখতে অনেকটা পালং শাকের মতো হলেও এর রঙে ভিন্নতা আছে। পাতা সবুজ ও লালচে ধরনের। নিচের মূল অংশটি দেখতে গাঢ় গোলাপি বা লালচে বেগুনি রঙের। বিভিন্ন পুষ্টি ও ওষুধিগুণ সম্পন্ন সবজিকে সুপারফুডও বলা হয়। শীতকালে উৎপাদন বেশি হলেও সব সময়ই এর দেখা মেলে। দামও সারাবছর ভালো পাওয়া যায়। তাই ২০ শতক জমিতে বিটরুট চাষ করে সাড়া ফেলেছেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সুপারির ভিটা গ্রামের ফারুকুজ্জামান ফারুক ও মাহফুজা বেগম।
ফারুকুজ্জামান ফারুক ও মাহফুজা বেগম জানান, দীর্ঘদিন ধরে ধান, পাটসহ প্রচলিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য আবাদ করেছেন তারা। কোনো চাষেই তেমন লাভবান হতে পারছিলেন না। তবে বিটরুট চাষে তিন মাসের ব্যবধানে অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভে খুশি তারা।
মাহফুজা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছেলেরা রাজি হলেও স্বামী অচেনা সবজি চাষে রাজি হচ্ছিলেন না। মোবাইলে দেখে এবং বিভিন্ন মানুষের সাথে পরামর্শ করে একপর্যায়ে তিনি রাজি হন। আবাদ ভালো হয়েছে। আমাদের দেখাদেখি অনেকে বিটরুট চাষ করতে চাচ্ছেন।’
Advertisement
ফারুকুজ্জামান ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০ শতক জমিতে বিটরুট চাষ করি। এখন জমিতে প্রায় ১ হাজার কেজি বিটরুট আছে। সর্বনিম্ন ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকার কাছাকাছি দামে বিটরুট বিক্রি করছি। আশা করছি লক্ষাধিক টাকার মুনাফা হবে।’
বিটরুট চাষের সাফল্য দেখে উৎসাহী পাশের বেড়াডাঙ্গা গ্রামের যুবক মেহেদী হাসান নয়ন। প্রাথমিকভাবে বাড়ির আঙিনায় বিটরুট চাষ করেছেন। আগামীতে বড় পরিসরে চাষাবাদ শুরুর কথা জানান তিনি। জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ সবজির চাহিদা ভালো দেখছি। দামও সারাবছর ভালোই থাকে। ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নাই।’
কৃষি বিভাগ জানায়, বিটরুট চাষের জন্য গাইবান্ধার দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি উপযুক্ত। মাত্র ৩ মাসেই ফলন পাওয়া যায়। এ অঞ্চলে বিটরুট চাষের অপার সম্ভাবনা আছে। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষক দম্পতিকে নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এটি ব্যাপকভাবে উৎপাদন করতে পারলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করা সম্ভব।’
এ এইচ শামীম/এসইউ/এএসএম
Advertisement